হাওয়া ভবন ফিরে পেতে বিএনপির আন্দোলন : কাদের
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা :
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি জনগনকে সরকার পতনের উষ্কানি দিচ্ছে। মূলত: তারেকের হাওয়া ভবন ফিরে পেতে বিএনপির এ আন্দোলন।
সোমবার টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামে দলের ত্রি-বার্ষিক জেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারেক রহমানকে নিয়ে নাকি বিপ্লবের মাধ্যমে ঢাকা নিয়ে আসবে। এয়ারপোটে দাওয়াত দিচ্ছে। তারেক রহমান মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল, আর রাজনীতি করবো না। এই তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনবে। হারানো ক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন চলছে। আসলে তারেকের হাওয়া ভবন ফিরে পেতে বিএনপির আন্দোলন চলছে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ১৩ বছরে ১৩ মিনিটও আন্দোলন দেখিনি। শেখ হাসিনার উদারতায় খালেদা জিয়া আজ মুক্ত। বিএনপি বেগম জিয়ার জন্য একটা মিছিলও করতে পারেনি। তেরো বছরও পারনেনি, এখন সরকার পতনের আন্দোলন করবেন। বিজয় মিছিল করবে, খালেদা জিয়াকে নিয়ে নাকি ১০ ডিসেম্বর বিজয় মিছিল করবে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবেন বলছেন। তিনি তো মুক্তই। তাকে নিয়ে তো আপনারা একটা মিছিলও করতে পারেননি। খালেদা জিয়াকে নিয়ে রাজনীতি কইরেন না, বেশিও বুইঝেন না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে জনতার সাগরের গর্জন শুনতে পাবে বিএনপি। ভোট চুরি, ভুয়া ভোটার তৈরি, ভোট জালিয়াতি, লুটপাট, দুর্নীতি ও নারী নির্যাতনকারী বিএনপির বিরুদ্ধে এবার খেলা হবে।
বিএনপিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আশা বাদ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামীতে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সরকার এতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না।
তিনি বলেন, বিএনপির আমলে মানুষ ঘরে থাকতে পারেনি। এখন মানুষ শান্তিতে থাকতে পারে। বাঁশের লাঠিতে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে রাস্তায় নামবেন তা হবে না। বরিশাল ও রংপুরে বস্তা বস্তা টাকা দিয়ে মানুষ নিয়ে গেছেন। ১০ লাখ মানুষের কথা বলেন! অথচ সমাবেশে তো আপনাদের চেয়ার ফাঁকা থাকে।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘পয়সা খেয়ে কমিটি করা লোকদের আওয়ামী লীগের প্রয়োজন নেই। এসব কর্মকান্ড যারা করেন নিজেকে সংশোধন করে ভালো হয়ে যান। কমিটিকে ঘিরে পদ বাণিজ্যের কথা যেন না শুনি। ডেকে ডেকে পকেটের লোক বসাবেন, তাও চলবে না। এবার তদন্ত করে খোঁজ-খবর নেব। পয়সা খেয়ে কমিটি করা লোকদের আমাদের প্রয়োজন নেই। কমিটি একটা হবে। নতুন নেতা আসতে দেন। বসন্তের কোকিল আছে, দুঃসময়ের লোক নেই। কে কী করে তা শেখ হাসিনাও জানেন।’
বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এমপি, এডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের এমপি।সম্মেলনে টাঙ্গাইলের আটটি সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্যসহ জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক কাউন্সিলরদের সমর্থনে পুণরায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুককে সভাপতি ও এডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের এমপিকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার ঘোষণা দেন।