নদী সীমান্তে চীনের ‘ভয়ঙ্কর জগত’
এশিয়ার দুই দেশ থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী দেশ দুটি কেবল লম্বা সরু নদীতে বিভক্ত। হংকংভিত্তিক ইয়াতাই ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিং গ্রুপ এক ফেসবুক ভিডিওতে চীন-থাইল্যান্ড-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোরে তার কথিত অবদানের কথা প্রচার করছে।
সীমান্ত বরাবর মই নদী ও শ্বে কোক্কো ইয়াতাই নিউ সিটিকে ১৫ বিলিয়ন ডলারের ভবিষ্যতের একটি চমত্কার শহর হিসেবে গড়ে তেলার জল্পনা চলছে ওই অর্থনৈতিক কোরিডোরের আওতায়। মিয়ানমারের সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত কারেন (কায়িন) রাজ্যে উন্নয়ন ভালোভাবে চলছে। যদিও সেখানে কারেন জাতিগোষ্ঠী বাহিনী কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৪৮ সাল থেকে তীব্র বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) পদক্ষেপ নিয়ে মিয়ানমারের অং সান সুচি সরকার প্রশ্ন তুলেছিলেন। শ্বে কোক্কো শহরটি থাইল্যান্ডের মায়ে সোটের ঠিক উত্তরে অবস্থিত, যেখানে গড়ে তোলা হবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিল্প পার্ক, পর্যটন এলাকা, জাতিগত সংস্কৃতির এলাকা, ব্যবসা এবং কৃষি এলাকা। এমনকি একটি আগ্নেয়াস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ সুবিধাও থাকবে।
শ্বে কোক্কোতে ‘মিয়ানমারের সিলিকন ভ্যালি’ গড়ে তোলা হবে। ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ চীন সাগরকে যুক্ত করে মেরিটাইম সিল্ক রোড স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এত জল্পনার মাঝে বাস্তবতা আসলে ঘোর অন্ধকার।
মূলত শ্বে কোক্কো অপরাধীদের অভয়ারণ্য। অনলাইন জুয়া, প্রতারণা এবং মানব পাচারের মতো অপরাধের কারখানা এই শহর। সু চির সরকার চীনের বিআরআই সংযোগ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশে পর থাইল্যান্ড ২০২০ সালে শহরটিতে বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ সেবা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু জরুরি প্রয়োজনীয় এই সেবাগুলো ২০২১ সালে ১ ফেব্রুয়ারিতেই আবার চালু হয়। কারণ সে সময় সুচির ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করেন সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং।
অগভীর মোই নদী শুকিয়ে হেঁটে পারাপারের পস্থিতিতে আরও অপরাধের আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে ওঠে। গত মাসে বিশ্লেষক প্রিসিলা এ. ক্ল্যাপ এবং জেসন টাওয়ার প্রকাশিত ইউএস ইনস্টিটিউট অফ পিসে (ইউএসআইপি) তার মন্তব্যে ওই এলাকাটিকে ‘বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
ক্ল্যাপ এবং জেসন টাওয়ার জানান, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি এবং এ বছরের মার্চের মধ্যে কোভিড মহামারি ওই অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়লে মোই নদীর ৪০ কিলোমিটার জুড়ে নতুন ছিটমহল গড়ে ওঠে।