বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি কেউ বিনষ্ট করতে পারবে না: মানিকগঞ্জে পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর আহবায়ক পীযুষ বন্দ্যোপাধায় বলেছেন, বাংলাদেশের সকল মানুষের ধর্মের মধ্যে যে সম্প্রতি রয়েছে। তা কেউ কোন দিন নসাৎ করতে পারবে না। হতাশার হওয়ার কিছু নেই।
আজ শনিবার মানিকগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমীতে সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর জেলাশাখা আয়োজিত’ বাংলা ও বাঙালির শাশ্বাত সম্প্রীতি’ শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য এ কথা বলেন।
সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর মানিকগঞ্জ জেলা শাখার আহবায়ক অধ্যাপক মো. আবদুর রউফ এর সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার অব., সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, সম্মানিত অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুস সালাম এ্যাডভোকেট, প্রফেসর ড. রেজাউল করিম, প্রফেসর বদর উদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর উর্মিলা রায়।
পীযুষ বন্দ্যোপাধায় বলেন, বঙ্গোপ সাগরের কূলে কূলে যে জনপদের মানুষ রয়েছে। এটি দানবের দেশ নয়। মানুষের দেশ। এ জনপদের পলিমাটিতে হাজার হাজার বছরের সম্প্রীতির উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে।
তিনি বলেলন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সম্প্রীতির পূর্নভূমি থেকে যাবে। কারো করো বক্তব্য সম্প্রীতি বিনষ্টের আশংকা থাকতে পারে। তবে হতাশ হবার কিছু নেই। বাংলাদেশর মানুষ ঐক্যবদ্ধ থেকে সব কিছু মোকাবেলা করেছে। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সকল শঙ্কা রুখতে হবে।
সম্প্রীতি রক্ষার যুদ্ধে নতুন প্রজন্মকে বিজয়ী হবার তাগিদ দিয়ে সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর যুগ্ম-আহবায়ক বীর মুক্তযোদ্ধা মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার অব. বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সবার দু:খে ব্যতিত হতে পেরে ছিলেন বলেই সকলকে নিয়ে একটি ধর্মনিরপেক্ষ জাতি গড়ে তুলে ছিলেন। এরফলে ধর্মনিরপেক্ষ স্বাধীন বাংলাদেশ গড়েছিলেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সময়ে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সরকার ছিলো সাম্প্রদায়িক। তখন জনগন ছিলো অসাম্প্রদায়িক। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক এবং ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হয়। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে সরকার ধর্মনিরপেক্ষ । কিন্তু জনগন সম্প্রাদায়িকতা দেখা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে উন্নয়নের বাস্তব মডেল।
তিনি আরো বলেন, আমারা দেশ স্বাধীন করে বিজয়ী হয়েছি। তরুন প্রজন্মকে সত্য কথা বলে বিজয়ী হতে হবে। যে কোন চক্রান্ত রুখতে হবে। সমাজকে বিভাজনের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। সেকারনে বিভিন্ন ধর্ম জাতির গোষ্ঠীর মধ্যে আত্নিক বন্ধন এবং সম্প্রতি বজায় রাখেত তরুন প্রজন্মকে সাহসের সাথে এগিয়ে আসেত হবে
সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা: মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন,
বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার একযুগের বেশি বাংলােদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এনেছেন। কোবিট-১৯ যে ভাবে মোকাবেলা করেছেন। সেটা সারা বিশ্বে নজির সৃষ্টি করেছে। এরকম এটা পরিস্থিতি সামাল দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের সকল উন্নয়ন ও অগ্রগতি ধরে রেখেছেন।
তিনি বলেন, অবকাঠােমা উন্নয়নের পাশাপাশি সংস্কৃতিক উন্নয়নও হচ্ছে।
দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র হিন্দুদের ভারত ও মুসলমানদের জন্য পাকিস্তান সৃষ্টি করা হয়েছিলো। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে মানুষে মানুষের মধ্য ভেদাভেদ সম্প্রতি অর্জিত হয়নি।
একমাত্র বাংলাদেশ সংবিধান পরিবর্তন করে ধর্মকে রাষ্ট্র ধর্ম করেছে। রাষ্ট্র কোন ধর্ম পালন করে কিনা আমার জানা নেই। এখানে ধর্ম নিয়ামক করা হয়েছে।
দ্বি-জাতি তত্ত্বের বিরুদ্ধে দাড়িয়ে এক জাতি এক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিববুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র চাননি বললেন তিনি।
স্বপ্নীল বলেন, বঙ্গবন্ধুকে কয়েক জন সেনা সদস্য হত্যা করেছে তা ধরে নেয়া ঠিক নয়। যারা ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র চেয়েছে। উপমহাদেশে তাদের বড় একটি চক্রান্তে তাকে হত্যা করা হয়।
তিনি বলেন, সব সময়ে ইতিহাস লিখেছে বিজয়ী জাতি, আমাদের ইতিহাস লিখেছে পরাজিতরা। সে কারণে আমরা কিছু ভুল জানছি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেদিন মারা যান সেদিন বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিলো ৭ শতাংশ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন – সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির সদস্য কেন্দ্রীয় ছাত্র নেতা ও কলামিষ্ট তাপস হালদার, মো. হেলাল উদ্দীন, ছাত্রনেতা ধীমান রায়, রাজীব কর, সাংবাদিক সিদ্দিকুর রহমান ও দীপক। শিল্পকলা একাডেমী অডিটোরিয়াম ভরপুর অনুষ্ঠানে মানিকগঞ্জের সাংস্কৃতিক সংগঠন সপ্ত সূর মনজ্ঞ সঙ্গীত পরিবেশন করে।