অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারে আরও সক্রিয় হোন : কূটনীতিকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণিজ্য ও রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের ধারা বজায় রাখতে অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় কাতারে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানস্থলে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার পাশাপাশি আপনাদেরকে (কূটনীতিকদের) অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদার করতে সক্রিয় হতে হবে।’ সম্মেলনে মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোতে অবস্থানরত বাংলাদেশি কূটনীতিগণ যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটতে যাওয়ায় সেই সব দেশের প্রতি মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন, যেখান থেকে বাংলাদেশ ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে লাভবান হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের চোখ কান খোলা রেখে সব দেশের সঙ্গেই আলোচনা এবং মধ্যস্থতা করতে হবে। যাতে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা টিকে থাকতে, আরও এগিয়ে যেতে এবং সবশেষে একটি উন্নত দেশে উন্নীত হতে পারি।’ পারি
শেখ হাসিনা বলেন, একসময় কূটনীতি একটি পররাষ্ট্রনীতির বিষয় ছিল। কিন্তু এখন এটি অর্থনৈতিক বিষয়, মানে অর্থনৈতিক কূটনীতি।
সরকার প্রধান বলেন, ‘কাজেই, আপনারা যারা বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন তাদেরকে সেই দেশগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে, যেদেশে আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারি। একই সঙ্গে যেসব দেশে আমাদের পণ্য রপ্তানির সুযোগ রয়েছে এবং যে দেশগুলো থেকে আমরা কম এবং ন্যায্য দামে পণ্য আমদানি করতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ব্যবসা ও বাণিজ্য আরও বাড়াতে এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
‘যেসব দেশে আমাদের পণ্যের চাহিদা আছে এবং যেখানে বিপণনের সুযোগ আছে সেই সমস্ত দেশকে চিহ্নিত করুন,’ বলেন তিনি।
বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের পররাষ্ট্র নীতির মূল ভিত্তি হচ্ছে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি অন্তত দাবি করতে পারি যে, বাংলাদেশ সঠিকভাবে এই নীতি অনুসরণ করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে, তবে, যখন কোনো অন্যায় দেখা যাবে, তখন বাংলাদেশ অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেই তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে, যা মিয়ানমারের ক্ষেত্রে করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ‘যখন মিয়ানমারে ঘটনাটি ঘটেছিল, তখন আমরা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু, আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সংঘাতে জড়াইনি। রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি উপস্থিত ছিলেন।
স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী এখন কাতার সফরে রয়েছেন।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানি এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে তিনি গত শনিবার কাতারে পৌঁছেন। বুধবার ঢাকার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। বাসস।