ফিনল্যান্ডকে ন্যাটোতে যোগদানের সুযোগ দিয়েছে তুরস্ক ও হাঙ্গেরি
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান কয়েক মাসের কূটনৈতিক চাপের অবসান ঘটিয়ে শুক্রবার সংসদে ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে দ্রুত অন্তর্ভুক্তির সুযোগ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এর পরপরই হাঙ্গেরি ফিনল্যান্ডের ন্যাটোভুক্তির সমর্থনে ২৭ মার্চ প্রস্তাবের অনুসমর্থনে ভোটের ঘোষণা দিয়েছে। এরফলে কয়েক মাসের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৩১টিতে।
ন্যাটোর এই সম্প্রসারণে রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটো ব্লকের সীমান্ত বৃদ্ধি পাবে ১.৩৪০ কিলোমিটার (৮৩০ মাইল)। এতে স্নায়ু যুদ্ধকালের এই প্রতিপক্ষের সাথে সীমান্ত প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে।
প্রাথমিকভাবে ফিনল্যান্ডের সাথে সুইডেনও ন্যাটোতে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করে। সুইডেন শেষ পর্যন্ত তুরস্কের সাথে বিরোধে জড়িয়ে জুলাইয়ে জোটের শীর্ষ সম্মেলনের আগে ব্লকে যোগদানের সুযোগ নষ্ট করেছে।
রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমনের পরিপ্রেক্ষিতে হেলসিঙ্কি এবং স্টকহোম কয়েক দশকের সামরিক নন-এলাইনমেন্টের অবসান ঘটিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত জুনে ন্যাটো সম্মেলনে তাদের আবেদন গৃহীত হয়। এতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর সংঘাতের আশঙ্কায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে দেশ দু’টিকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তির ইঙ্গিত দেয়া হয়। অবশ্য এই আবেদন এখনও জোটের ৩০টি সদস্য দেশের পার্লামেন্টে অনুমোদিত হতে হবে। তুরস্ক ও হাঙ্গেরির জন্য এই প্রক্রিয়া কয়েকবার পিছিয়ে গিয়েছিল।
এরদোয়ান ফিনিশ প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিস্তোকে বলেছেন, হেলসিঙ্কি আঙ্কারার নিরাপত্তা উদ্বেগ মোকাবেলার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সংসদে আলোচনার পর এরদোয়ান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আমাদের ন্যাটোতে ফিনল্যান্ডের যোগদানের প্রোটোকল শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এরদোয়ান বলেন, তিনি ‘আশা করেন’ মে মাসে তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ নির্বাচনের আগে পার্লামেন্ট আবেদনটি অনুমোদন করবে।
তুরস্কের সংসদের চলতি অধিবেশন এপ্রিলের মাঝামাঝি শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ তুরস্কের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ তিনি সুইডেনের যোগদানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন উভয়ই দ্রুত ন্যাটোর পূর্ণ সদস্য হওয়া।
হোয়াইট হাউস ন্যাটো প্রধানের বক্তব্যের সমর্থন জানিয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হাঙ্গেরিকে তার সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড উভয়ের জন্য ‘বিলম্ব না করে’ অনুসমর্থন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আহবান জানিয়েছে।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফিনল্যান্ড সম্পর্কে তুরস্কের ঘোষণাকে ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত’ বলে অভিহিত করেছে।