দিনাজপুরে গোর-এ শহীদ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত
দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই জামাতে ৬ লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম হয়েছে বলে দাবি আয়োজক কমিটির। জামাতে দিনাজপুর ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মুসল্লিরা অংশ নেন।
গোড়-এ শহীদ বড় ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় আজ শনিবার সকাল ৯টায়। এতে ইমামতি করেন মাওলানা শামসুল হক কাশেমী। নামাজে অংশ নেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, ঈদগাহ মাঠের প্রধান উপদেষ্টা ও পৃষ্ঠপোষক জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ প্রমুখ।
ময়মনসিংহ থেকে আসা দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান বলেন, একবার এই জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করতে চেয়েছি। এজন্য এবার ছুটিতে বাড়িতে যাইনি। বিশাল ময়দানে লাখ-লাখ মানুষের সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেছি।
পঞ্চগড় থেকে আসা শাহরিয়ার ইসলাম বলেন, আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করেছেন এখানে ঈদের নামাজ আদায় করার, খুব ভালো অনুভব করছি। এটি আসলেই আমাদের জন্য বড় পাওয়া।
হাফেজ মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, রংপুরের বদরগঞ্জ থেকে এখানে এসেছি। সকাল ৬টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়েছি। আল্লাহ আমাদের সবার মনের আশা পুরণ করে দিক। ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ছিল। আর প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিল সব ধরনের আয়োজন।
পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, এই আয়োজন সফল করার জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ সব দফতরই কাজ করেছে। ঈদ জামাত যাতে নিরাপদে হয় সেজন্য সমন্বিত পরিকল্পনা ছিল এবং কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ছিল। টহল ছিল, চেকপোস্ট ছিল, সিসি ক্যামেরা, ড্রোন, রাস্তার মোড়ে মোড়ে পাহারা ছিল।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, সফলভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীসহ সবার জন্য দোয়া কামনা করেছি। সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা সফলভাবে এই নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ায়।
এই জামাতে ৬ লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ও পৃষ্ঠপোষক জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। আগামীতে এই ময়দানটি আরও উন্নত করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের জন্য দোয়া কামনা করেছি। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত থাকার জন্য দোয়া করেছি। প্রায় ৬ লক্ষাধিক মুসল্লির সমাগম হয়েছে। গত বছরের চেয়েও এবারে মুসল্লির সংখ্যা বেশি হয়েছে। এই মাঠটিকে আরও সৌন্দর্যমন্ডিত করা হবে। আমাদের পাশে আরও একটি মাঠ রয়েছে, যদি মুসল্লির সংখ্যা বেশি হয় তাহলে ওই মাঠটিও ব্যবহার করা হবে।
২০১৫ সালে এই ঈদগাহ মিনার নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ছয়টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। পরে ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনা ভাইরাসের কারণে এই মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০২২ সালে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সেই জামাতে প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছিলেন।