বঙ্গভবন থেকে বিদায় নিয়ে আবদুল হামিদ নিকুঞ্জের বাসায় উঠছেন

শেয়ার করুন

বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের শেষ কার্যদিবস ছিল গতকাল রোববার । আজ সোমবার সকালে বঙ্গভবনে এক শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন তিনি। আবদুল হামিদকে বঙ্গভবন থেকে বিদায় জানাতে চলছে প্রস্তুতি।

দীর্ঘ ১০ বছরের অধিক সময় ধরে তার দুই মেয়াদে দেশের সর্বোচ্চ পদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি ভবনে তিনি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। বঙ্গভবনের ৫২ বছরের ইতিহাসে এটি বিরল দৃষ্টান্ত।

আজ দুপুরে একজন নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ এবং সুষ্ঠু ক্ষমতা হস্তান্তর হতে যাচ্ছে। দুপুরের পর থেকে আবদুল হামিদ আর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি থাকছেন না।

মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ মো. শাহাবুদ্দিন দেশের ২২তম প্রেসিডেন্ট হবেন। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ তাঁর পরিবার নিয়ে নাগরিক জীবনে গণমানুষের কাতারে আবার সামিল হবেন। এরপরে তাঁকে আবার ট্রাফিক লাইট এবং মোড়ে থামার অভ্যাস করতে হবে। আবদুল হামিদ রাজধানীর নিকুঞ্জে নিজ বাসা ‘রাষ্ট্রপতি লজে’ থাকবেন।

সেখানে পরিবারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী স্থানান্তর করা হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে। প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আজ দুপুরে বঙ্গভবন ত্যাগ করবেন। সন্ধ্যায় নতুন রাষ্ট্রপতি আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গভবনে উঠবেন। তবে আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে পরদিন সকালে নতুন রাষ্ট্রপতিকে ‘গার্ড অফ অনার’ দেয়া হবে। প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) একটি সুসজ্জিত চৌকস অশ্বারোহী দল বিদায়ী রাষ্ট্রপতিকে অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করবে।

বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বঙ্গভবন গেট থেকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যাবেন। মাঝখান দিয়ে খোলা জিপে করে রাষ্ট্রপতি যাবেন। তাঁর খোলা জিপে ফুলের পাপড়ি ছুঁড়ে তাঁকে বিদায় জানানো হবে। সেখান থেকে তাঁকে শেষবারের মতো মোটর শোভাযাত্রায় নিকুঞ্জের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানান আবেদিন। টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ১০ বছর ৪১ দিন কাটিয়ে অবসরে যাচ্ছেন আবদুল হামিদ। প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্য আবদুল হামিদ পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর ২০১৩ সালের ২০ মার্চ তিনি ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হন। পরে আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। আবদুল হামিদ ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার কামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৯ সালে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৬৯ সালের শেষ দিকে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। আবদুল হামিদ নবম সংসদে স্পিকার নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ডেপুটি স্পিকার ছিলেন। আবদুল হামিদ এর আগে ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতার পর থেকে সাতবার সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন।


শেয়ার করুন

Similar Posts