প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম আর নেই, রাত ১ টায় জানাজা

শেয়ার করুন

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী আর নেই। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।

এদিকে গতকাল রাত সাড়ে ১ টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবে কামরুল ইসলাম চৌধুরীর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রায় ৭০ বছরের ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথম মধ্যরাতে কোন সদস্যের জানাজা পড়া হলো। আজ বুধবার সকালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির আইচাপাড়া গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

কামরুল ইসলাম চৌধুরী প্রায় এক মাস ধরে বিএসএমএমইউতে ভর্তি ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিসে ভুগছিলেন, যা পরে ক্যান্সারে রূপ নেয়। তার লিভার ট্রান্সপ্লান্টের জন্য দুয়েকদিনের মধ্যে দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যা রেখে গেছেন।

কামরুল ইসলাম দৈনিক সংবাদ ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেছেন। সবশেষ গত ডিসেম্বরে তিনি বাসস থেকে বার্তা সম্পাদক হিসেবে অবসর নেন।

অর্থনৈতিকবিষয়ক সাংবাদিকতায় তিনি বেশ সুনাম অর্জন করেন। পরে তিনি দেশের অন্যতম প্রধান পরিবেশ সাংবাদিক হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনি পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতিও ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিবেশ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

কামরুল ইসলাম চৌধুরী ১৯৬০ সালের ৩০ ডিসেম্বর নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। সাংবাদিকতার মাধ্যমে পরিবেশ উন্নয়ন ও সুরক্ষায় ভূমিকা রাখার জন্য ‘লায়নস অ্যাওয়ার্ড ফর প্রফেশনালস অ্যাকসিলেন্স’ পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

আজ বুধবার সকালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির আইচাপাড়া গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত কামরুল ইসলাম চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন। এক বিবৃতিতে নেতারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তার মৃত্যুতে বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদসহ বাসসের সব সাংবাদিক ও কর্মচারীও শোক প্রকাশ করেছেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রায় ৭০ বছরের ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথম মধ্যরাতে কোন সদস্যের জানাজা পড়া হলো। রাত সাড়ে ১১টায় কামরুল ইসলাম চৌধুরীর পুত্র রাফায়েত চৌধুরী ফোনে জানান, নোয়াখালীর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পথে তার বাবার বহু স্মৃতি বিজড়িত সেকেন্ড হোমে লাশ কিছুক্ষণ রাখতে চান। জিজ্ঞাসা করলাম বাবাকে কয়টায় প্রেস ক্লাবে আনতে পারবে। বললো সাড়ে ১২টায়। রাত প্রায় ১টায় গুলশানের বাসা থেকে কামরুল ভাইয়ের মরদেহ জাতীয় প্রেস ক্লাবে পৌঁছে। পরিবারের তাড়া থাকায় ২০ মিনিটের মধ্যে বক্তব্য ও জানাজা শেষ করতে হয়।

সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে আয়োজিত এই জানাজায় অন্যান্যের মধ্যে শরিক হন জাতীয় প্রেস ক্লাবের কোষাধক্ষ্য শাহেদ চৌধুরী, বিএফইউজে কোষাধক্ষ্য খায়রুজ্জামান কামাল, ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান, বিএফইউজের সাবেক কোষাধ্যক্ষ আতাউর রহমান, ক্লাবের সিনিয়র সদস্য শাহনেওয়াজ দুলাল, মাহমুদুর রহমান খোকন ও সমকালের চীফ রিপোর্টার লোটন একরাম। প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে যুগ্ম সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়া ও কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী এবং পরিবারের পক্ষ থেকে কামরুল ইসলাম চৌধুরীর পুত্র রাফায়েত চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।


শেয়ার করুন

Similar Posts