‘বাবা, প্লিজ ফিরে এসো’! শহিদের নিথর দেহ দেখে আকুতি ১০ বছরের কন্যার
শনিবার উত্তরপ্রদেশের কৃপালপুরে দলপত চকে দেহ এসে পৌঁছয় নিলামের। তিরঙ্গা পতাকায় মোড়া কফিন দেখে ভেঙে পড়েন পরিবার থেকে স্থানীয়েরা।
কান্নায় ভেঙে পড়েছে প্যারাট্রুপার নিলাম সিংহের ১০ বছরের কন্যা। ছবি: পিটিআই।
কফিনে শায়িত প্যারাট্রুপার নিলাম সিংহের নিথর দেহ। কিছুতেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না স্ত্রী বন্দনা। স্বামীর বরফ-ঠান্ডা মুখটা দু’হাতে চেপে ধরেন। তার পর জ্ঞান হারান। ১০ বছরের মেয়েটির আকুতি আরও প্রবল। চিৎকার করে কেঁদে ওঠে, ‘‘বাবা উঠছ না কেন? প্লিজ ফিরে এসো।’’ দিদির পাশে বসেই ডুকরে কেঁদে ওঠে সাত বছরের অঙ্কিতও।
শুক্রবার জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরিতে জঙ্গলের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। শহিদ হয়েছেন পাঁচ জওয়ান। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন প্যারাট্রুপার নিলাম। শনিবার উত্তরপ্রদেশের কৃপালপুরে দলপত চকে দেহ এসে পৌঁছয় নিলামের। তিরঙ্গা পতাকায় মোড়া কফিন দেখে ভেঙে পড়েন পরিবার থেকে স্থানীয়েরা। থিকথিকে ভিড়ের মধ্যেই অনেকেই এক বার ছুঁতে চাইছিলেন শহিদকে। তার মাঝেই ধ্বনি ওঠে, ‘নিলাম সিংহ অমর রহে’। শেষ বার স্বামীকে কুর্নিশ জানান বন্দনা। তার পরেই সেনার পূর্ণ সম্মানের মধ্যে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় নিলামের। ভাই অঙ্গদও সিআইএসএফ জওয়ান। তিনিই শেষকৃত্য করেন দাদার।
বাবা হুরদেব সিংহ জানালেন, দিন কয়েক আগেই বাড়ি এসেছিলেন ছেলে। ওই যে শেষ বার নিজের পায়ে ঘরে ফিরবেন ছেলে, তখন ভাবতেও পারেনিন। হুরদেব বলেন, ‘‘আমি ছেলের জন্য গর্বিত। ও বীর সেনা ছিলেন। জঙ্গিদের সঙ্গে লডাইয়েই মৃত্যু হল। ও জন্মেছিল বীর যোদ্ধা হিসাবে। ছোট থেকেই সেনায় যোগ দিতে চাইত।’’ হুরদেবের সুরেই কথা বলেন বন্দনার বাবা ক্যাপ্টেন রঘুবীর সিংহ ভাউ। তিনিও ছিলেন সেনাবাহিনীতে।
তিনি জানালেন, জামাই নিলাম একাধিক সফল অভিযানে সামিল হয়েছিলেন। সেই যুদ্ধক্ষেত্রেই মৃত্যু তাঁর।