সরকারি খরচে বিদেশ ভ্রমণ বন্ধের নির্দেশ

শেয়ার করুন

চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে সব ধরনের গাড়ি, বিমান ও জাহাজ কেনাকাটা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এছাড়া উন্নয়ন বাজেটের আওতায় নতুন গাড়ি কেনা বন্ধ এবং প্রকল্পের অর্থ ছাড় পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। সব ধরনের আবাসিক, অনাবাসিক, অন্যান্য ভবন ও স্থাপনা খাতে বরাদ্দ দেয়া অর্থ ব্যয়ও বন্ধ থাকবে। বৈদেশিক ভ্রমণ, কর্মশালা, সেমিনারে অংশগ্রহণ এবং ভূমি খাতের অধিগ্রহণ বাবদ বরাদ্দ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত জরুরি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে কতিপয় খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকার এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের জন্য বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ সাশ্রয় করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎ খাতের সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ এবং জ্বালানি খাতের বরাদ্দে সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ খরচ করা যাবে বলেও নির্দেশনায় বলা হয়।

অর্থ বিভাগের উপ-সচিব আনিসুজ্জামান স্বাক্ষরিত এ পরিপত্রে বলা হয়, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের লক্ষ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং আওতাধীন অধিদপ্তর/পরিদপ্তর/দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত/আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর কর্পোরেশন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে কতিপয় খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকার নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

এর মধ্যে রয়েছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পরিচালন বাজেটের আওতায় অর্থনৈতিক কোডসমূহে বরাদ্দকৃত অর্থ নিম্নোক্তভাবে ব্যয় করা যাবে:

(১) বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ, পেট্রোল, ওয়েল ও লুব্রিকেন্ট ও গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ।

সকল আবাসিক ভবন, অনাবাসিক ভবন এবং অন্যান্য ভবন ও স্থাপনা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে। সকল প্রকার মোটরযান, জলযান ও আকাশযান খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে। তবে ১০ বছরের অধিক পুরনো মোটরযান প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদনক্রমে ব্যয় নির্বাহ করা যাবে এবং ভূমি অধিগ্রহণ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে।

উপরের খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ অন্য কোনো খাতে এবং অন্য কোনো খাত হতে এসব খাতে পুনঃ উপযোজন করা যাবে না।

যেসব শর্তে বিদেশ ভ্রমণ করা যাবে

নতুন নির্দেশনায় সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণ, কর্মশালা, সেমিনার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হলেও কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হয়েছে। কোনো বিদেশ ভ্রমণ কর্তৃপক্ষের অত্যাবশ্যকীয় বিবেচিত হলে সীমিত আকারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে করা যাবে।

এছাড়া পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সরকারি অর্থায়নে এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা/বিশ্ববিদ্যালয়/দেশ কর্তৃক প্রদত্ত স্কলারশিপ/ফেলোশিপের আওতায় বৈদেশিক অর্থায়নে মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়ন করা যাবে।

বিদেশি সরকার/প্রতিষ্ঠান/উন্নয়ন সহযোগীর আমন্ত্রণে ও সম্পূর্ণ অর্থায়নে আয়োজিত বৈদেশিক প্রশিক্ষণ; এবং সরবরাহকারী/ঠিকাদার/পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন কর্মকর্তারা সেবা/পণ্যের গুনগত মান নিরীক্ষা/পরিদর্শন খাতে সীমিত ভ্রমণ করতে পারবে।

গত অর্থবছরে ১৫ হাজার কোটি সাশ্রয়

২০২২-২৩ অর্থবছরের শুরু থেকে সরকারের কৃচ্ছ্রসাধনের নীতিতে এ পর্যন্ত সরকারি ব্যয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

এই অর্থের মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা খাত থেকে সাশ্রয় হয়েছে ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা।


শেয়ার করুন

Similar Posts