ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ
আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি অ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনির বিরুদ্ধে এক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা আনোয়ার হোসেনকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা আনোয়ার হোসেন এমন অভিযোগ করেন। ওইদিন বিকেলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে সোমবার দুপুরে আমতলী উপজেলার হালিমা খাতুন নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
জানাগেছে, উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের হালিমা খাতুন নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা আনোয়ার হোসেনকে না জানিয়ে গোপনে ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হন। সোমবার দুপুরে চেয়ারম্যান তার সহযোগীদের নিয়ে ওই বিদ্যালয়ে যান। বিদ্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককের কাছে বিদ্যালয়ের কাগজপত্র চান। এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাগজপত্র দিতে অনিহা প্রকাশ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি সহকারী শিক্ষকদের সামনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা আনোয়ার হোসেনকে গালাগাল করে। এক পর্যায় চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা প্রধান শিক্ষককে মারধর করেছে এমন অভিযোগ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা আনোয়ার হোসেন। চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের মারধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পরিধেয় জামা ছিড়ে যায়। তিনি আরো অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম মনি তাকে মারধর করেই খ্যান্ত হয়নি তাকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেয়ারও হুমকি দেন।
ওইদিন বিকেলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা চেয়ারম্যানের এমন ঘটনায় বিচার দাবী করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, চেয়ারম্যান ও তার লোকজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে মারধর করেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
স্থানীয় হাসন আলী খান, আবু বকর মুসুল্লী ও জয়নাল বলেন, চেয়ারম্যান হয়ে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে মারধর করবে এটা মেনে নেয়া যায়না। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
প্রত্যক্ষদর্শী বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল ওহাব, জুলহাস ও অফিস সহকারী তাজনেহারা বলেন, চেয়ারম্যান এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি তার লোকজন নিয়ে এসে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা আনোয়ার হোসেনকে গালাগাল শেষে মারধর করেছেন। এটা অত্যান্ত গর্হিত কাজ। আমরা চেয়ারম্যানের এমন ঘটনার শাস্তি দাবী করছি।
গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি এ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে মিটিং করতে গিয়েছিলাম। মিটিং শেষে চলে এসেছি।
আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জিয়াউল হক মিলন বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ তাওহিদুল ইসলাম বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।