অমাবস্যার প্রভাবে উত্তাল সমুদ্র, নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরছে মাছ ধরা ট্রলার

শেয়ার করুন

অমাবস্যার জো’র প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে ওঠেছে। প্রচণ্ড ঢেউয়ের তোড়ে টিকতে না পেরে নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরছে মাছ ধরা ট্রলার। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় কর্মহীন হয়ে পড়া জেলেরা সমুদ্রে মাছ শিকারে গিয়ে সমুদ্রের উম্মাদনায় ফিরে আসতে বাধ্য হওয়ায় তাদের চোখে মুখে বিষন্নতার ছাপ দেখা গেছে।

গত ২৩ জুলাই মধ্যরাতে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গভীর সমুদ্রে যাত্রা করে উপকূলের সস্রাধিক মাছ ধরা ট্রলার। বেশ কিছু ট্রলার সাগরের মোহনা থেকে ঘাটে ফিরে এসেছে। আর সমুদ্রের গভীরে যাওয়া ট্রলারগুলো উত্তাল সমুদ্রে দুই একবার জাল ফেলে মাছ না পেয়ে তীরে ফিরে এসেছে। ফের সমুদ্র যাত্রায় ছেড়া জাল বুনে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা।

জেলে তৈয়ব আলী জানান, আমরা সাগরে যাবার সময় মোহনা থেকে প্রচণ্ড তুফান দেখছি। ভাবনা ছিলো গভীর সমুদ্রে ঢেউ কম থাকবে। কিন্তু গভীর সমুদ্রেও প্রচুর তুফান এবং প্রচন্ড স্রোত রয়েছে। তারপরও একবার জাল ফেলছিলাম। কিন্তু ঢেউয়ের ঝাপটায় সব জাল রশির সাথে প্যাঁচিয়ে এবং ছিড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। জাল ঠিক করতে কমছে কম এক সপ্তাহ সময় লাগবে।

এফ.বি তামান্না ট্রলারের মাঝি মো. ইউনুস মিয়া বলেন, ট্রলারে তৈল ও বরফ ভরে প্রস্তুতি নেওয়া ছিল। ২৪ জুলাই সকালে সমুদ্রে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাগর উত্তাল হওয়ার খবর পেয়ে আর যাওয়া হয়নি। মাছ ধরার উপযোগী হলে সমুদ্রে যাবো।

এফ.বি বিসমিল্লাহ-০১ ট্রলারের মাঝি একলাছ গাজী বলেন, ২৩ জুলাই গভীর রাতে আলীপুর ঘাট থেকে সমুদ্রে গিয়েছিলাম। ২৪ জুলাই দুপুরের জোয়ারে হঠাৎ সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে দুই দিন ফিশিং করে ২৫ জুলাই রাত্রে ঘাটে এসে মাত্র এক লক্ষ টাকা বিক্রয় করেছি। বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়েনি। ছোট ও মাঝারি সাইজের ইলিশ আছে।

মৎস্য বন্দর আলীপুরের মনি ফিসের মালিক আঃ জলিল ঘরামী বলেন, ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে জেলেরা সমুদ্রে গিয়েছিলো। সমুদ্র উত্তাল থাকার কারণে ঘাটে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে। তারা শুধু খাবার মাছ পেয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, অবরোধ শেষে যে সকল ট্রলার গভীর সমুদ্রে গিয়েছিলো তা ঘাটে ফিরে এসেছে। সমুদ্রে প্রচন্ড ঢেউ ও স্রোত রয়েছে। চলমান জো’র প্রভাবে সমুদ্র অস্বাভাবিক উত্তাল। আগামী দুই-তিন দিনেও সমুদ্র স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

অপু সাহা আরও বলেন, অমাবস্যার জো’র প্রভাব কেটে গেলে সমুদ্র স্বাভাবিক হবে। তখন জেলেদের জালে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করছি।


শেয়ার করুন

Similar Posts