এফবিসিসিআই নব-নির্বাচিত সভাপতি মাহবুবুল আলমের দায়িত্ব গ্রহণ
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন মাহবুবুল আলম।
সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বাধীন নতুন পরিচালনা পর্ষদের (২০২৩-২৫) কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ।
নতুন পরিচালনা পর্ষদের সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রক ও বিপণন সমিতির সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী। চেম্বার গ্রুপ থেকে সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খায়রুল হুদা চপল, গাজীপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার ও বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি যশোদা জীবন দেবনাথ।
অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শমী কায়সার, মেইজি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি রাশেদুল হোসেন চৌধুরী রনি এবং এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি মো. মুনির হোসেন।
দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই এর নতুন সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা সকলেই একসঙ্গে কাজ করবো। এজন্য সকলের সহযোগিতা চাই। দিন শেষে আমাদের একটাই পরিচয় আমরা ব্যবসায়ী। বেসরকারী খাতের সুরক্ষা এবং বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করতে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো।’
নতুন পরিচালনা পর্ষদের পাশাপাশি সাবেকদের সহযোগিতা চান মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। বিশেষ করে জেনারেল বডি মেম্বার ছাড়া চলতে পারেনা এফবিসিসিআিই। তাই এফবিসিসিআইকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে চাই। পুরান ঢাকায় একটা লিয়াজুঁ অফিস প্রস্তুত করাসহ রাজধানী ঢাকায় একটি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার করতে চাই; যা ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে করেছি আমরা।
নতুন পর্ষদের দায়িত্ব নিয়ে বেশকিছু কর্মপরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করেন মাহবুবুল আলম। তার মধ্যে রয়েছে, খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসহ ২১ সদস্যবিশিষ্ট অ্যাডভাইজরি কমিটি গঠন, এফবিসিসিআই এর অধীনস্ত সকল চেম্বার অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে একটি ওয়েব পোর্টাল প্রস্তুত, প্রতি তিন মাসে অন্তত একটি স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা ইত্যাদি। এসময় গুলশানে এফবিসিসিআই শাখা অফিস খুব শীঘ্রই চালু করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সংগঠনের বিদায়ী সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন নতুন বোর্ডকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আপনারা আগামীর বাংলাদেশে সাড়ে ৩ কোটিরও বেশি ব্যবসায়ীকে নেতৃত্ব দেবেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ছিলো মাত্র ৭৯ বিলিয়ন ডলার, বর্তমানে যেটি হয়েছে ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার। সামনে আমাদের ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির জার্নি রয়েছে, এলডিসি গ্রেজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেখানে নতুন বোর্ডের ওপর অনেক দায়িত্ব রয়েছে। আমার বিশ্বাস তারা সেটি সফলভাবে করতে পারবেন।
২০২৩-২৫ এর পরিচালনা পর্ষদের মধ্যে চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন থেকে ৪০ জন করে মোট ৮০ জন পরিচালক নির্বাচিত হন। নির্বাচিত পরিচালকদের মধ্য থেকে একজন সভাপতি, একজন সিনিয়র সহসভাপতি এবং ছয়জন সহসভাপতি নির্বাচিত হন।
বর্তমানে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে যুক্ত হন ১৯৮৩ সালে। গত প্রায় চার দশকে কমোডিটি ট্রেডিং থেকে শুরু করে ব্যাংক ও আর্থিক পরিষেবা, পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন তিনি। বর্তমানে ৯টি খাতে ১৭টি ব্যবসা উদ্যোগ রয়েছে মাহবুবুল আলমের।
তিনি ২০১৩ সাল থেকে টানা ৫ বার চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এবং দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের বাণিজ্য সংগঠন সার্ক চেম্বারের সহ-সভাপতি ছিলেন।
এছাড়া বন্দর নগরী চট্টগ্রামে জাপানের অনারারি কনসাল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।