কলাপাড়ায় ১০ বছর পর যুবলীগের সম্মেলন হচ্ছে
দীর্ঘ ১০ বছর পর অবশেষে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গঠনতন্ত্রের ১৬ ও ২১ ধারা মোতাবেক ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ যুবলীগের উপজেলা সম্মেলনের তারিখ নির্ধারন করা হয়েছে। যুবলীগ জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট মো: শহিদুল ইসলাম ও সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো: সোহেল স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ তথ্য
নিশ্চিত করা হয়েছে।
এর আগে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি, সম্পাদক পদে জীবন বৃত্তান্ত আহ্বান করে জেলা যুবলীগ। বিগত ২৮ জুলাই উপজেলা যুবলীগের সম্মেলনের তারিখও নির্ধারন করে জেলা যুবলীগ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্থগিত হয়ে যায় কলাপাড়া উপজেলা যুবলীগের ২৮ তারিখের সম্মেলন।
সূত্র জানায়, কলাপাড়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি-সম্পাদক উপজেলা আওয়ামীলীগের
সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পাওয়ায় পর থেকে অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে যুবলীগ।
এরপর গত ১০ বছরেও তৃনমূলের কমিটি না হওয়ায় তৃনমূল নেতা কর্মীদের সাথে যুবলীগ নেতৃবৃন্দের যোগাযোগ হ্রাস পায়। এতে তৃনমূল থেকে উপজেলা পর্যন্ত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে সংগঠনটি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টিতে কেন্দ্রের নির্দেশনায় সম্মেলনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এতে চাঙ্গা হয়ে উঠতে শুরু করেছে যুবলীগ। সভাপতি, সম্পাদক পদ বাগিয়ে নিতে পেশী শক্তি নিয়ে মাঠে নামতে শুরু করেছে সিরিজ মামলার আসামীরাও। যাদের হাতে দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী নির্যাতনের শিকার হয়ে পঙ্গুত্ব বরন করেছে। এরা পদ পেতে জেলা ও কেন্দ্রে লবিং তদ্বির শুরু করেছে জোরে শোরে। তবে তৃনমূলের নেতা-কর্মীদের দাবী দক্ষ, পরিশ্রমী, ত্যাগী নেতা-কর্মীকে পদ দেয়া হোক। যাদের নেতৃত্বে ১০ বছরের নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া যুবলীগ আগামী দিনে স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজপথে মোকাবেলা করতে পারে।
সূত্রটি আরও জানায়, যুবলীগের সভাপতি পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন মো: হুমায়ুন কবির, মো: শহিদুল ইসলাম, মো: জিয়াউর রহমান, সৈয়দ জাকির হোসেন, সৈয়দ মশিউর রহমান শিমু, জাকি হোসেন জুকু প্রমূখ। এদের মধ্যে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, পৌরসভার বারংবার নির্বাচিত কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র মো: হুমায়ুন কবিরকে সভাপতি হিসেবে চান তৃনমূলের নেতা কর্মীরা। তৃনমূল কাউন্সিলে নেতৃত্ব নির্বাচন হলে হুমায়ুন কবিরের বিকল্প নেই বলছে দলীয় সূত্র।
এদিকে ছাত্রলীগের উপজেলা সভাপতি, সম্পাদক পদ নিয়ে ১৫-২০ লক্ষ টাকা লেনদেনের তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি গনমাধ্যমে উঠে আসে। বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়ে ছাত্রলীগ। পরে ইমেজ রক্ষায় জেলা থেকে কমিটি ঘোষনার মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি জেলা ঘোষিত উপজেলা কমিটি স্থগিত করে দেয়। এরপর যুবলীগের উপজেলা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হলে বিস্ফোরক ষ্ট্যাটাস দেয় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো: শফিকুল আলম বাবুল ।
তিনি তার ফেসবুক পেইজে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামিম আল সাইফুলকে নিয়ে লেখেন, ‘উপজেলার বারোটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায় থেকে উপজেলা পর্যন্ত সভাপতি, সাধারন সম্পাদক কে হবে তা নির্ধারন করে কর্মীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আত্মসাত করে
নিয়েছেন।
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মো: শফিকুল আলম
বাবুল বলেন, ‘উপজেলা যুবলীগ নিষ্ক্রিয় বলে যারা মন্তব্য করেছে তারা সংগঠনের কেউ না, ওরা হাইব্রীড। ওয়ার্ড পর্যায় থেকে উপজেলা পর্যন্ত সভাপতি-সম্পাদক পদের জন্য মোটা অংকের টাকা লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এরকম শুনতে পাই বাতাসে। এরকম খবরে আমি অনেকটা শংকিত।’
জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা উপজেলা
সম্মেলনের পর কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তরে পদ প্রত্যাশীদের বায়োডাটা জমা দেবো। যুবলীগ চেয়ারম্যান ও সম্পাদক মহোদয়ের সমন্বয়ে যাচাই বাছাই শেষে উপজেলা কমিটি অনুমোদন দেয়া হবে। অবশ্যই ত্যাগ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতা নির্বাচিত হবেন।
অ্যাডভোকেট শহিদুল আরও বলেন, দীর্ঘদিন জেলা সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলাম। স্বচ্ছতার সাথে যুবলীগের দায়িত্ব পালন করছি। কমিটি নিয়ে কোন রিউমার যুবলীগের নেই। আমরা ক্লিন যুবলীগ করি।