স্বাধীনতাবিরোধীরা যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, ইসিকে সম্প্রীতি বাংলাদেশ
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা যেন অংশ নিতে না পারে, সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ । একই সঙ্গে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠেনর নেতারা।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় চার দফা দাবি উত্থাপন করেছে। ইসির সঙ্গে বৈঠকে সম্প্রীতি বাংলাদেশের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। আর ইসির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনাররা এবং ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনটির লিখিত দাবিগুলো মধ্যে রয়েছে, ধর্মভিত্তিক প্রচারণা এবং তার ফলে সৃষ্ট পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক প্ররোচণা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ; মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এবং একাত্তরের পরাজিত শক্তি যাতে আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে ব্যাপারে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু, শান্তিপ্রিয় নির্বাচনমুখী সাধারণ ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল চিহ্নিত করে সহিংসতা রোধে পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
বৈঠক শেষে সম্প্রীতি বাংলাদেশের সভাপতি পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জাতীয় নির্বাচন এলেই সংখ্যালঘু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করে, তাদের কপালে ভাঁজ পড়ে। আমরা এটা আর দেখতে চাই না।
তিনি বলেন, ইসিকে বলেছি, আপনারা শক্তভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। সম্প্রীতি বাংলাদেশের মতো অরাজনৈতিক সংগঠনগুলো সহায়তা করবে। ইসি সহমত পোষণ করেছে।
২০০১ সালের মতো ‘ব্ল্যাক অক্টোবর’ আর বাংলাদেশে দেখতে চাই না মন্তব্য করে এই নাট্যব্যক্তিত্ব বলেন, যে ভয়াবহতা, নৃশংসতা, যে অত্যাচার প্রায় ৭১ সালকে মনে করিয়ে দেয়। সে জিনিসগুলো আমরা বাংলাদেশ থেকে চিরতরে সরিয়ে দিতে চাই। যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে তাদের সরকারে এবং কোনও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় দেখতে চাই না।
কোনও আতঙ্কে ভুগছেন কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ঘরপোড়া গরুর মতো, অতীতের ভয় থেকে এসেছি। সাবধানের কোনও মার নেই।
আপনারা ইসিকে কী সহায়তা করতে পারেন এই প্রশ্নের জবাবে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনও কাজ যদি তারা করেন, আমরা সহযোগিতা দেবো। ২০০১ সালে আমরা সারা দেশ ঘুরে নির্যাতন-পাশবিকতার চিহ্ন দেখেছি, বর্বরতার চিহ্ন দেখেছি। সেটা যেন আর না হয়।
তিনি বলেন, আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। আমরা চাই এ দেশে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী নির্বাচনমুখী হোক এবং এবারের ভোটারদের মধ্যে তরুণরা বেশি। তাদের আমরা নির্বাচনমুখী করতে বলেছি। এজন্য কেবল ইসি নয়, দলগুলোরও ভূমিকা রয়েছে। সামাজিক সংগঠন, মিডিয়ার ভূমিকাও ফেলে দেওয়া যায় না।
পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভোটের উৎসব যদি তরুণদের মধ্যে ফিরিয়ে আনতে পারি। তবে অচিরেই আমরা একটি খোলসমুক্ত নির্বাচন প্রক্রিয়া পাবো। ভয় করছি যারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তাদের নিয়ে। যদি বিএনপির ভেতরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী থেকে থাকে, আমরা দেখেছি যাদের প্রগতিশীল মনে করেছি তাদের ওখানেই নির্যাতন বেশি হয়েছে। তাই যদি আশঙ্কা করে থাকি, সেটা সমীচীন’।