জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েল- হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আলোচনা

শেয়ার করুন

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কাতার। হামাসের কাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ জন ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে এ যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে।

অন্তত দুই দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকরে কাতারের এ প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত আছে যুক্তরাষ্ট্রও। একটি সূত্রের বরাত দিয়ে গতকাল বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

কাতার হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির জন্য জোরালো কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অতিসম্প্রতি চার জিম্মিকে ইসরায়েলের হাতে হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে। তাদের দু’জন ইসরায়েলি এবং দু’জন মার্কিন নাগরিক।

কাতারে মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। গাজা শাসনকারী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করে চলে দেশটি। হামাসের রাজনৈতিক অফিসও কাতার থেকে পরিচালিত হয়। হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার প্রধান বাসভবন এখানেই। তিনি কাতার থেকেই মূলত গাজার প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন।

এদিকে গাজায় সহিংসতা বন্ধ করে দ্রুত জরুরি সহায়তা সরবরাহের জন্য ‘মানবিক বিরতি’র আহ্বান জানিয়েছেন জি-৭ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। তারা ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করেছেন এবং গাজায় ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলার নিন্দা করেননি। গতকাল জাপানের টোকিওতে জি-৭ দেশগুলোর শীর্ষ কূটনীতিকরা এক বৈঠকে মিলিত হন। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়ার সভাপতিত্বে এতে যোগ দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনসহ যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি এবং ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

বৈঠক শেষে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের বিষয়ে নেতারা গাজায় মানবিক বিরতির ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান ঘোষণা করেন। এ সময় তারা হামাসের নিন্দা করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারে জোর দিয়েছেন। ফিলিস্তিনে জোরপূর্বক বসতি স্থাপনকারীদের (ইসরায়েলের) নিন্দাও করেন তারা। নেতারা বলেন, জোর করে বসতি স্থাপন একদিকে পশ্চিম তীরের নিরাপত্তাকে দুর্বল করছে, অন্যদিকে অঞ্চলটিতে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এই যৌথ বিবৃতিকে একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন বলে অভিহিত করেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, খাদ্য ও পানি সংকটে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি দক্ষিণ গাজার দিকে পালিয়ে যাচ্ছে। গাজার অভ্যন্তরে ছড়িয়ে থাকা সুড়ঙ্গের জাল এক গোলকধাঁধা পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে বলে স্বীকার করেছে ইসরায়েল সামরিক বাহিনী।

গাজার সর্বশেষ পরিস্থিতি

গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১০ হাজার ৫৬৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি স্থলবাহিনী এবং বিমান ও আর্টিলারির হামলা অব্যাহত রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা গতকাল আলজাজিরাকে বলেন, ইসরায়েলি সৈন্যরা গাজা শহরের কেন্দ্রে ঢুকে পড়েছে। পশ্চিম গাজায় পাবলিক স্কুলে আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দাদের ওপর হামলা হয়েছে।

ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষদের আটকাভিযান অব্যাহত রয়েছে। গাজায় ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ডা. আশরাফ আল কুদ্রা ব্রিফিংয়ে জানান, ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় গাজায় নিহতদের মধ্যে ৪ হাজার ৩২৪ শিশু, ২ হাজার ৮২৩ জন নারী এবং ৬৪৯ জন বৃদ্ধ। আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ৪৭৫। গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন ২১৪ জন। ১ হাজার ৩৫০ শিশুসহ অন্তত ২ হাজার ৫৫০ জন নিখোঁজ রয়েছে।


শেয়ার করুন

Similar Posts