আমতলীতে কৃষকের স্বপ্ন পুড়ছে
এবার কপাল প্ইুর্যা গ্যাছে। কি আর দ্যাখবেন ধানের খ্যাত নাই? পোহায় সব খাইয়া খালি হইর্যা হালাইছে। কত ঔষধ দিলাম কিছুই অইলো না। ধানতো এবার অইবে না গুড়াগাড়া লইয়্যা কি খামু হেইয়্যার চিন্তা হরি। এ কথা বলেছেন চাওড়া পাতাকাটা এলাকার কৃষক ইউনুচ মল্লিক ও নাশির হাওলাদার। তারা আরো বলেন, ওই ফসলের ওপর মোগো হারা বচ্ছরের আয়। হেইয়্যাই এ বচ্চর অইবো না। মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো পোকাসহ বিভিন্ন পোকার আক্রমণে আমতলীর সাড়ে ৩৩ হাজার কৃষকের স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। এতে দিশেহারা হয়ে পরেছেন তারা। পোকা দমনে প্রকারের কীটনাশক প্রয়োগ করলেও কোন কাজে আসছে না বলে জানান কৃষকরা। দ্রুত এ পোকা দমন করতে না পারলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্ক রয়েছে বলে জানান তারা।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার ৩৩ হাজার ৫১২ জন কৃষক এ বছর ২৩ হাজার ৩৭১ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছে। গত আশ্বিন মাসের শেষের দিকে কৃষকরা জমি চাষাবাদ শেষে বীজ বপন করে। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারনে দেরীতে চাষাবাদ করায় বীজের বৃদ্ধি ভালো হয়নি। কিন্তু এর মধ্যে গত ১৫ দিন ধরে ক্ষেতে মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো পোকাসহ বিভিন্ন পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এ পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষায় কৃষকরা বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজে আসছে না। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পরেছেন। এ পোকা দমন করতে না পারলে ফসলের ব্যপক ক্ষতি হওয়ার আশংঙ্কা করছেন তারা। এদিকে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কীটনাশক ব্যবসায়ীরা বেশী দামে কীটনাশক বিক্রি করছে।
কিন্তু ব্যবসায়ীরা বেশী দামে কীটনাশক বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কোম্পানীর দামেই বিক্রি করছি। কৃষকরা বলেন, মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো পোকায়সহ বিভিন্ন পোকা ধান ক্ষেতের ব্যপক ক্ষতি করছে। এ প্রতিরোধে কীটনাশক প্রয়োগ করছি কিন্তু কাজে আসছে না। পোকা দমন করতে না পারলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
বুধবার আমতলী উপজেলার চাওড়া, কুকুয়া ও হলদিয়া ও আঠারোগাচিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ক্ষেতে মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো পোকায় ক্ষেত খেয়ে ফেলেছে। ক্ষেতের বীজ লালচে বর্ন ধারন করছে। কৃষকরা পোকা দমনে ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করছেন।
মধ্য চন্দ্র গ্রামের কৃষক জাকির মাতুব্বর ও কুকুয়ার কৃষক আব্দুর রব বলেন, মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকা ধানের ক্ষেত খেয়ে ফেলছে। এ পোকা দমনে কীটনাশক প্রয়োগ করছি।
পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের কৃষক সোহেল রানা বলেন, ধান ক্ষেত মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো পোকায় খেয়ে শেষ করে দিয়েছে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও পোকা দমনো যাচ্ছে না।
কাউনিয়া গ্রামের জিয়া উদ্দিন জুয়েল বলেন, বৈরি আবহাওয়ার কারনে এ বছর শেষের দিকে জমিতে বীজ বপন করেছি। তাতে বীজের বৃদ্ধি কম হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে পোকার আক্রমণে বীজের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ীরা বেশী দামে কীটনাশক বিক্রি করছে।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ঈছা বলেন, মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকতারা কাজ করছেন। তিনি আরো বলেন, পোকা দমনে রাইডার প্লাস ও এসিপ্রিড প্লাস প্রতি লিটার পানিতে ০.৩ গ্রাম হারে মিশ্রন করে স্প্রে করতে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।