বাইডেন-শি’র ‘সফল’ শীর্ষ সম্মেলন ॥ সামরিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে সম্মত দু’নেতা

শেয়ার করুন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে তার ‘সবচেয়ে গঠনমূলক’ আলোচনাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তারা এক বছরের মধ্যে প্রথম এই শীর্ষ বৈঠকে উত্তেজনা হ্রাসে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ পুন:স্থাপনে সম্মত হয়েছেন।

বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির নেতারা এক বছরে তাদের প্রথম আলোচনার জন্য ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ঐতিহাসিক এস্টেটে মিলিত হওয়ার সাথে সাথে হাত মেলালেন এবং হাসলেন এবং বাগানে হাঁটার সাথে চার ঘন্টার শীর্ষ বৈঠকটি শেষ করলেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার ফিলোলি এস্টেটে এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, ‘আমি সবেমাত্র প্রেসিডেন্ট শি’র সঙ্গে কয়েক ঘণ্টার বৈঠক শেষ করেছি এবং আমি বিশ্বাস করি যে সেগুলো আমাদের মধ্যে সবচেয়ে গঠনমূলক এবং ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।’

ইউএস ডেমোক্র্যাট বাইডেন বলেছেন, তিনি চীনা কমিউনিস্ট নেতার সাথে অনেক বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করলেও, যাকে তিনি ২০১১ সাল থেকে চেনেন, শি বুধবার আলোচনার সময় স্বাভাবিক ছিলেন।

২০২২ সালে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফর করার পরে চীন সামরিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছিল। বাইডেন বলেন, এই বৈঠকে সেই যোগাযোগ ‘পুনরুদ্ধার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’।
‘দুই পক্ষের ভুল ধারণা চীনের মতো একটি দেশের সাথে বাস্তব সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে-একথা উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা সেখানে সত্যিকারের অগ্রগতি অর্জন করছি।’

তবে শি এবং বাইডেন তাইওয়ানের প্রশ্নে ব্যাপক আলোচনা থেকে অনেক দূরে ছিলেন। চীনের প্রেসিডেন্ট তার মার্কিন সমকক্ষকে তাইওয়ানকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করতে বলেন এবং তাইওয়ানের পুনর্মিলন ‘অপ্রতিরোধ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন।
বেইজিং স্ব-শাসিত গণতন্ত্রের উপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে এবং তা দখল করার দাবিতে ‘অটল’ রয়েছে।

উভয় পক্ষ অন্যান্য চুক্তির ঘোষণা করেছে। যার মধ্যে রয়েছে, চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওপিওড (ড্রাগ) অপব্যবহারের একটি মারাত্মক মহামারীর জন্য দায়ী ওষুধ ফেন্টানাইলের উৎপাদান হ্রাসে করতে সম্মত হয়েছে। তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আলোচনা করতেও সম্মত হয়েছেন। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ কথা জানিয়েছে।

২০২২ সালের নভেম্বরে বালিতে আলোচনার পর থেকে এই দুই নেতা ব্যক্তিগতভাবে দেখা করেননি এবং এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি কথিত চীনা গুপ্তচর বেলুনকে গুলি করে নামানোর পরে সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দেয়।
এরপর থেকে বেইজিং ও ওয়াশিংটন দুই নেতাকে মুখোমুখি পেতে তীব্র কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হয়।

এর আগে বাইডেন বলেছিলেন, আলোচনা ‘ভালভাবে’ হয়েছে এবং মনোরম কান্ট্রি এস্টেটের মাঠে তারা যখন পাশাপাশি হাঁটছিলেন উভয়েই সাংবাদিকদের দিকে হাত নেড়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।

প্রতিনিধিদল নিয়ে বৈঠকে একটি দীর্ঘ কাঠের টেবিল জুড়ে বসা শি’কে উদ্দেশ্য করে বাইডেন বলেছেন, ‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে প্রতিযোগিতা যেন সংঘর্ষে না যায়।’
শি এর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘দুই দেশের সফল হওয়ার জন্য এই গ্রহ যথেষ্ট বড়।’

শি বলেন, চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দুটি বড় দেশের জন্য একে অপরের দিকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া কোন বিকল্প নয়।’


শেয়ার করুন

Similar Posts