এমপি প্রার্থীদের হলফনামায় ৮টি তথ্য দিতে হবে

শেয়ার করুন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় আটটি তথ্যের সপক্ষে কাগজপত্র দাখিল করার নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সোমবার (২৭ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনা অধিশাখার উপসচিব আতিয়ুর রহমান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় এ তথ্য জানানো হয়।

ইসি জানায়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ১২ এর দফা (৩খ) অনুসারে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামার মাধ্যমে ৮টি তথ্য ও কোনো কোনো তথ্যের সপক্ষে কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা যথাযথভাবে দাখিল করা হয়েছে কিনা এবং হলফনামার তথ্যসমূহ যথাযথ কিনা রিটার্নিং অফিসার তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেবেন। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যাবলী ভোটারদের মধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। হলফনামায় দেয়া তথ্য প্রচারের সুবিধার্থে প্রার্থীদের কাছ থেকে হলফনামার মূল কপি ছাড়াও আরও দুটি ফটোকপি নিতে হবে।

প্রার্থীর হলফনামার মাধ্যমে ৮ তথ্যের বিষয়ে নিচে বিস্তারিতভাবে দেয়া হলো:

১. প্রার্থীর সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেটসহ উত্তীর্ণ পরীক্ষার নাম (এ ঘর খালি রাখা যাবে না, কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলে নিরক্ষর, স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন, প্রাসঙ্গিক তথ্য উল্লেখ করতে হবে। তবে বাস্তবে এমনও হতে পারে যে সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট কোনো প্রার্থীর কাছে নেই। সেক্ষেত্রে সর্বশেষ যোগ্যতা এমএ তবে সময়ের অভাবে তা সংগ্রহ করতে না পারায় বিএ পাসের সার্টিফিকেট সংযুক্ত করা হলো- এভাবেও তথ্য দেয়া যেতে পারে)

২. প্রার্থীর বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো ফৌজদারি মামলা আছে কিনা: এ সংক্রান্ত সঠিক তথ্য দিতে হবে।

৩. অতীতে প্রার্থীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া কোনো ফৌজদারি মামলার রেকর্ড আছে কিনা, থাকলে তার রায় কি ছিল? (প্রার্থী সব তথ্য প্রদান করবেন এটাই প্রত্যাশিত। তবে অতীতের মামলা সংক্রান্ত, বিশেষ করে অনেক পুরনো হলে, বিশদ তথ্য প্রার্থীর কাছে সঙ্গত কারণেই নাও থাকতে পারে। তাই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়ে গেছে, বা খালাস পেয়েছেন অথবা অনেক আগে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এমন ক্ষেত্রে বিশদ তথ্য না দিতে পারার কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হবে না। তবে দণ্ডিত হয়ে থাকলে এবং সহজলব্য তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে উল্লেখ না করার বিষয় প্রমাণিত হলে মনোনয়নপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না)।

৪. পেশার বিস্তারিত বিবরণ দিতে হবে।

৫. আয়ের উৎস বা উৎসসমূহ: আয়কর রিটার্ন এবং মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রদত্ত অনুরূপ তথ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সমীচীন।

৬. প্রার্থীর নিজের ও অন্যান্য নির্ভরশীলদের পরিসম্পদ ও দায় এর বিবরণী (উল্লেখ্য যে, প্রার্থীর টিআইএন নম্বর, সম্পদ ও দায় এবং বাৎসরিক আয় ও ব্যয়ের বিবরণী ফরম-২১ ও তার সম্পদ বিবরণী সংবলিত সর্বশেষ দাখিল করা আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ সংক্রান্ত কাগজপত্র ব্যতীত মনোনয়নপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না। আয়কর রিটার্নের কপি গেজেটেড কর্মকর্তা/আয়কর আইনজীবীর মাধ্যমে প্রত্যয়ন করলেও গ্রহণযোগ্য হবে)।

৭. ইতোপূর্বে জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন কিনা এবং থাকলে ভোটারদের প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি এবং এর কী পরিমাণ অর্জন সম্ভব হয়েছিল এ সংক্রান্ত তথ্যাদি (ইতোপূর্বে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলেই কেবল এটি প্রযোজ্য হবে। কোনো প্রতিশ্রুতি না থাকলে ‘প্ৰতিশ্ৰুতি নেই’ অথবা ‘অৰ্জন নেই’ ইত্যাদি লেখা হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে)।

৯. কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রার্থীর একক বা যৌথভাবে বা প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীল সদস্য গৃহীত ঋণের পরিমাণ অথবা কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা পরিচালক হওয়ার সুবাদে ওইসব প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত ঋণের পরিমাণ সংক্রান্ত তথ্যও সঠিকভাবে দিতে হবে।

এদিকে চলতি মাসের ১৫ তারিখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হবিবুল আউয়াল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।

তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়নের আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি।


শেয়ার করুন

Similar Posts