তৃতীয় দিন শেষ করলো বাংলাদেশ
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৩০ রানে এগিয়ে স্বাগতিক বাংলাাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে তৃতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ৩৮ রান করেছে টাইগাররা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ১৭২ রানের জবাবে ১৮০ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড।
বৃষ্টি ও আলো স্বল্পতার কারনে আজ তৃতীয় দিন ৩২ দশমিক ৩ ওভার খেলা হয়েছে। বৃষ্টির কারনে গতকাল, দ্বিতীয় দিন মাঠেই নামতে পারেনি দু’দলের খেলোয়াড়রা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিনই অলআউট হয় বাংলাাদেশ। জবাবে দিন শেষে ৫ উইকেটে ৫৫ রান করেছিলো নিউজিল্যান্ড। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ১১৭ রানে পিছিয়ে ছিলো কিউইরা। ড্যারিল মিচেল ১২ গ্লেন ফিলিপস ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।
বৃষ্টির কারনে দ্বিতীয় দিনের খেলা পরিত্যক্ত হয়। আজ তৃতীয় দিনের শুরুতে মাঠ ভেজা থাকায় দুপুর ১২টায় খেলা শুরু হয়।
মিচেলকে ১৮ রানে বিদায় করে বাংলাদেশকে দিনের প্রথম সাফল্য এনে দেন স্পিনার নাইম হাসান। পরের ওভারে স্যান্টনারকেও ব্যক্তিগত ১ রানে শিকার করেন নাইম। প্রথম স্লিপে স্যান্টনারের ক্যাচ নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
৯৭ রানে সপ্তম উইকেট পতনের পর কাইল জেমিসনকে নিয়ে রানের চাকা সচল করেন ফিলিপস। মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৩৮ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ফিলিপস। এরপর জুটিতেও হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন ফিলিপস-জেমিসন। জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি আসার পর তাদের বিচ্ছিন্ন করেন পেসার শরিফুল ইসলাম।
ইনিংসের প্রথম ওভার বল করার পর ৩৩তম ওভারে দ্বিতীয়বারের মত আক্রমনে এসেই তুলে উইকেট নেন শরিফুল। প্রথম স্লিপে শাহাদাতের দারুন ক্যাচে শরিফুলের শিকার হন ৩টি চারে ২০ রান করা জেমিসন। ফিলিপসের সাথে ৫৩ বলে ৫৫ রান যোগ করেন জেমিসন।
এরপর অধিনায়ক টিম সাউদিকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে লিড এনে দেন ফিলিপস। ৩৬তম ওভারে ফিলিপসকেও বিদায় করে নিউজিল্যান্ডকে বড় লিড নেওয়া সুযোগ নষ্ট করেন দেন শরিফুল। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭২ বলে ৮৭ রান করে আউট হন ফিলিপস।
দলীয় ১৮০ রানে নবম ব্যাটার হিসেবে ফিলিপস আউট হবার ৩ বল পর ১৮০ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। শেষ ব্যাটার হিসেবে সাউদিকে ১৪ রানে শিকার করেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের মেহেদি হাসান মিরাজ ৫৩ রানে ও তাইজুল ইসলাম ৬৪ রানে ৩টি করে এবং শরিফুল ইসলাম ১৫ রানে ও নাইম হাসান ২১ রানে ২টি করে উইকেট নেন।
প্রথম ইনিংসে ৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই স্পিনার দিয়ে শুরু করে সাফল্য পায় নিউজিল্যান্ড। স্পিনার আজাজ প্যাটেলের বলে স্লিপে মিচেলকে ক্যাচ দিয়ে ২ রানে বিদায় নেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়।
প্রথম ওভারে জয়কে হারানোর পর দ্বিতীয় ওভারেই লিড নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় উইকেটে আরেক ওপেনার জাকির হাসানকে নিয়ে জুটি গড়ার পথে ছিলেন শান্ত। কিন্তু অষ্টম ওভারে সাউদির বলে ড্রাইভ দিয়ে মিড অফে কেন উইলিয়ামসনকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ২টি চারে ১৫ রান করা তিনি।
অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলে ৩৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতন হয় বাংলাদেশের। ঐ ওভারের শেষ বলের পর দুপুর ২টা ৪৬ মিনিটে আলো স্বল্পতায় বন্ধ হয় খেলা। পরবর্তীতে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বিকেল ৪টা ১৩ মিনিটে দিনের নির্ধারিত সময়ের ৬৭ মিনিট আগেই শেষ হয় খেলা।
জাকির ১৬ ও মোমিনুল শূণ্য হাতে অপরাজিত আছেন। নিউজিল্যান্ডের প্যাটের ও সাউদি ১টি করে উইকেট নেন।
স্কোর কার্ড : (টস-বাংলাদেশ)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ১৭২/১০, ৬৬.২ ওভার (মুশফিক ৩৫, শাহাদাত ৩১, ফিলিপস ৩/৩১)
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস (প্রথম দিন শেষে ৫৫/৫, ১২.৪ ওভার) :
লাথাম ক নুরুল ব তাইজুল ৪
কনওয়ে ব মিরাজ ১১
উইলিয়ামসন ব শাহাদাত ব মিরাজ ১৩
নিকোলস ক শরিফুল ব তাইজুল ১
মিচেল ক মিরাজ ব নাইম ১৮
ব্লান্ডেল এলবিডব্লু ব মিরাজ ০
ফিলিপস ক নুরুল ব শরিফুল ৮৭
স্যান্টনার ক শান্ত ব নাইম ১
জেমিসন ক শাহাদাত ব শরিফুল ২০
সাউদি ক মিরাজ ব তাইজুল ১৪
প্যাটেল অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (বা-৫, লে বা-৫, ও-১) ১১
মোট (অলআউট, ৩৭.১ ওভার) ১৮০
উইকেট পতন : ১-২০ (কনওয়ে), ২-২২ (লাথাম), ৩-৩০ (নিকোলস), ৪-৪৬ (উইলিয়ামসন), ৫-৪৬ (ব্লান্ডেল), ৬-৯৫ (মিচেল), ৭-৯৭ (স্যান্টনার), ৮-১৫২ (জেমিসন), ৯-১৮০ (ফিলিপস), ১০-১৮০ (সাউদি)।
বাংলাদেশ বোলিং :
শরিফুল : ৪-১-১৫-২ (ও-১),
মিরাজ : ১১-১-৫৩-৩,
তাইজুল: ১৬.১-০-৬৪-৩,
নাইম: ৪-০-২১-২,
মোমিনুল: ২-০-১৭-০।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস :
জাকির অপরাজিত ১৬
জয় ক মিচেল ব প্যাটেল ২
শান্ত ক উইলিয়ামসন ব সাউদি ১৫
মোমিনুল অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (বা-৪, লে বা-১) ৫
মোট (২ উইকেট, ৮ ওভার) ৩৮
উইকেট পতন : ১-৩ (জয়), ২-৩৮ (শান্ত)।
নিউজিল্যান্ড বোলিং :
প্যাটেল : ৪-০-১৩-১,
স্যান্টনার : ২-০-১২-০,
সাউদি : ২-০-৮-১।