বাংলাদেশে আরব বসন্তের অপচেষ্টা চালাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র : রাশিয়া
নির্বাচনের পর বাংলাদেশে আরব বসন্তের মতো কাণ্ড ঘটানোর অপচেষ্টা চালাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র- এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাশিয়া।
শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আগামী কয়েক সপ্তাহে নিষেধাজ্ঞাসহ কয়েকটি পদ্ধতিতে বাংলাদেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে ওয়াশিংটন।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের বরাবরই সমালোচনা করে আসছে রাশিয়া। এরই মধ্যে গত ২৩ নভেম্বর রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস অক্টোবর মাসে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা নিয়ে এবার আরও ভয়াবহ মন্তব্য করলো মস্কো।
বিবৃতিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন,
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশে আরব বসন্তের মতো পরিস্থিতি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
মস্কোর আশঙ্কা আগামী কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাসহ আরও কয়েকটি চাপ প্রয়োগের অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে ওয়াশিংটন। বাইডেন প্রশাসনের টার্গেট হতে পারে বাংলাদেশের প্রধান শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো।
সেইসঙ্গে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার ছুতোয় অনেক কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র- এমন শঙ্কাও প্রকাশ করেছে রাশিয়া। প্রমাণ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র এসব অভিযোগ আনবে বলে মন্তব্য করেছেন জাখারোভা।
২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে তিউনিসিয়া, মিশর, লিবিয়া, সিরিয়া ও ইয়েমেনে সরকার উৎখাত করা হয়। গণতন্ত্রের নামে সরকার পতনের এই প্রক্রিয়াকে পশ্চিমারা আরব বসন্ত বলে উল্লেখ করে। কিন্তু সেই বসন্তের ভয়ঙ্কর পরিণতি আজও ভোগ করছে দেশগুলোর জনগণ।
আফ্রিকার উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি লিবিয়ার জনপ্রিয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে হত্যার মাধ্যমে দেশটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধ থেকে দেশটি আজও পুরোপুরি বের হতে পারেনি।
আফ্রিকার আরেক দেশ মিশরে সেই আন্দোলনে স্বৈরশাসক হোসনি মুবারকের পতন হলেও দেশটির প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিকে উৎখাত এবং প্রহসনের বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এরপর দেশটির জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয় আরেক কুখ্যাত সামরিক শাসক জেনারেল সিসিকে। গণতান্ত্রিক ধারায় নেই ফরাসি উপনিবেশ থেকে স্বাধীন হওয়া আফ্রিকার আরেক দেশ তিউনিসিয়াও।
পশ্চিমাদের কথিত সেই বসন্তে সিরিয়ার কী হাল হয়েছে তা সবার জানা। ইয়েমেনের লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু আর দুর্ভিক্ষ পশ্চিমাদের কপটতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে।
নিউজফ্ল্যাশ/ এসএ।