বিএনপির কারণে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়
বাংলাদেশ যখন আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের উৎসবে প্রবেশ করছে, তখন দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে লাইনচ্যুত করতে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা জাতি প্রত্যক্ষ করছে। বিএনপির কৌশলগত পদক্ষেপের কারণে সারাদেশে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য উল্লেখ করেছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ যখন আগামী ৭ জানুয়ারি নির্ধারিত একটি অত্যন্ত অংশগ্রহণমূলক এবং সমৃদ্ধভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের উৎসবে প্রবেশ করছে, তখন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে লাইনচ্যুত করার জন্য একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা প্রত্যক্ষ করছে জাতি।
জনপ্রিয়তা এবং রাজনৈতিক সমর্থন অর্জনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি ও তাদের মিত্রদের একটি অংশ আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য প্রতিবন্ধকতা তৈরির লক্ষ্যে অবরোধ কার্যকর করতে তাদের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। বিএনপির এ কৌশলগত পদক্ষেপের ফলে সারাদেশে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সমর্থকরা আতঙ্ক সৃষ্টি এবং তাদের বিতর্কিত দাবিগুলো মেনে নিতে সরকারের ওপর অযথা চাপ সৃষ্টি করতে এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। এর একটি উজ্জ্বল উদাহরণ ১৩ ডিসেম্বর ঘটে। যখন বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা ইচ্ছাকৃতভাবে রেলওয়ে ট্র্যাকের ২০ ফুটের একটি অংশ সরিয়ে ফেলে। এর ফলে ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভোর ৪টার দিকে লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় একজন নিহত এবং ৫০ জনের বেশি যাত্রী আহত হন। ঘটনাটি বিএনপির ডাকা ৩৬ ঘণ্টার অবরোধের প্রত্যক্ষ পরিণতি। এর পাশাপাশি এসব দল জাতীয় স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করার জন্য কতটা বিপজ্জনক দৈর্ঘ্যের দিকে যাবে, তার উদাহরণ।
এরপর আবার ১৯ ডিসেম্বর ঢাকার তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় নাশকতাকারীরা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের তিনটি বগিতে আগুন দেয়। এ ঘটনায় একজন নারী ও তার তিন বছরের ছেলেসহ অন্তত চার যাত্রী নিহত হন। বিএনপি-জামায়াত জোটের কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক অস্থিরতার বাইরে প্রসারিত।নাগরিকদের শারীরিক এবং সরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি করেছে তারা। পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা গোষ্ঠীগুলোর রেলের ট্র্যাক ছিন্ন করার জন্য ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ উন্মোচন করেছেন।
ট্রেনকে লক্ষ্য করে হামলার এ ধরন নতুন কিছু নয়। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত জোট প্রায় চার হাজার যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে। একাধিক রেলে আগুনসহ একই ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল তারা। এ ধরনের কৌশলের সাম্প্রতিক পুনরুত্থান ধ্বংসাত্মক পদ্ধতিতে ফিরে আসার ইঙ্গিত দেয়।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের পর দেশব্যাপী প্রায় ৪০০টি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। আগামী দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে হরতাল-অবরোধের কৌশল অতীতের কর্মকাণ্ডেরই উদ্বেগজনক পুনরাবৃত্তি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধন করতে বিএনপি-জামায়াত জোট শুধু শারীরিক এবং সম্পদের ক্ষতিই করেনি, পুলিশ হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্সসহ অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবাগুলোতেও আক্রমণ করেছে।
মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও দমকল বিভাগ দ্রুত সাড়া দেয়। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, কাজটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত।