অবশেষে পেটে ক্ষুধা থাকা আমতলী উপজেলার সেই বিএনপির আহবায়ক বহিস্কার
আন্দোলন ছেড়ে টাকার বিনিময়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কর্মী সমর্থকদের কেন্দ্র পাঠিয়ে ভোট দেয়ার অডিও ফাঁস হওয়া আমতলী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জালাল উদ্দিন ফকিরকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। বুধবার দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়।
জানাগেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। কিন্তু আমতলী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জালাল উদ্দিন ফকির আন্দোলন থেকে সরে গিয়ে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আতাত করে আসছে এমন অভিযোগ দলীয় নেতাকর্মীদের। আন্দোলন জোরদার করতে বিএনপির আহবায়ক জালাল ফকির গত ২৭ ডিসেম্বর আমতলী উপজেলার সকল ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে তার এক আত্মীয়ের বাসায় ডেকে নেন। ওই বৈঠকে জালাল উদ্দিন ফকির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রস্তাব এসেছে তাকে ভোট দিলে তিনি প্রত্যেক ইউনিয়নে খরচ বাবদ এক লক্ষ টাকা করে দিবেন। এই মুুর্হুতে নেতাকর্মীদের হাতে টাকা পয়সা নেই। পদধারী ছাত্রদল, য্বুদলসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে নামতে পারবে না। তবে সাধারণ কর্মী ও সমর্থকরা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে আসবে। এমন সময় বিএনপির আহবায়ক তুহিন মৃধাকে বলতে শোনা গেছে এতো অল্প টাকার জন্য কেন আন্দোলন সংগ্রাম ছেড়ে কর্মী সমর্থকদের ভোট কেন্দ্রে পাঠাবেন।
এমন প্রশ্নে জবাবে জালাল ফকির বলেন, আমার পেটে ক্ষুধা আছে। আন্দোলন সংগ্রামে কেউ ৫০ হাজার, এক লক্ষ টাকা দিতে পারবেন? পারবেন মাত্র ৫ হাজার ১০ হাজার টাকা দিতে। ওই অডিওতে আরো বলতে শোনা গেছে কাফেরদের টাকা খাওয়া জায়েদ আছে। ৭ তারিখ নির্বাচন হলে ফোরকান মিয়া এমপি হবে। তাতে আমাদের অসুবিধা নেই।
তিনি আরো বলেন, টাকা দুই ধাপে দিবে নির্বাচনের মাঝামাঝি সময়ে অর্ধেক আর নির্বাচনের দিন বাকী অর্ধেক। ওই অডিওতে আরো শোনা গেছে, এ্যাড. জসিম ও রুস্তম ভাই আপনারা বলেন কি করবো? ১০ মিনিটের ওই অডিওতে তার অনেক গোপন রহস্য বেড়িয়ে এসেছে।এ গোপন অডিও ফাঁস হলে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। দলের বিরুদ্ধে এমন ষড়যন্ত্রকারী জালাল ফকিরের বিরুদ্ধে সংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। জালাল ফকিরের এমন অডিও ফাঁসের বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে নড়েচরে বসে বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতারা। বুধবার দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জালাল উদ্দিন ফকিরকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা বিএনপির বহিস্কৃত আহবায়ক জালাল উদ্দিন ফকিরের মুঠোফোনে ( যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত) আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, দলের হাইকমান্ডের সিন্ধান্ত মোতাবেক বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে জালাল উদ্দিন ফকিরকে বহিস্কার করা হয়েছে।