সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে যেকোনো মূল্যে রুখে দিতে হবে

শেয়ার করুন

সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার ঠাই নাই’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বাঙালি সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শবিরোধী এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে যেকোনো মূল্যে রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তারা বলেছেন, আমাদের জাতীয় জীবনে যখনই ঘনিয়ে এসেছে অমানিশার কালো ছায়া, বিপন্ন করতে চেয়েছে আমাদের সম্প্রীতির সাজানো বাগান, আমরা জেগে উঠেছি। বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে নস্যাৎ করেছে সব ষড়যন্ত্র। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিনিসুতোর এক নিশ্ছিদ্র বন্ধনে আমরা আবদ্ধ।

সভায় বক্তারা আরও বলেন, আজ আমরা দাঁড়িয়ে আছি এক যুগসন্ধিক্ষণে। বহমান সময়ের সঙ্গে আমাদের যাত্রা প্রগতি ও অগ্রগতির পথে।

বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস মিলন আর সম্প্রীতির ইতিহাস উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, এদেশে ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িকতার স্থান নেই, স্থান নেই একাত্তরের পরাজিত শক্তির। ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দিতে সমাজের সর্বস্তরে আজ ঐক্য প্রয়োজন। ধর্মের দোহাই দিয়ে যারা আমাদের মুক্তিযদ্ধের আদর্শ জলাঞ্জলি দিতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। আর সে কারণেই আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পূর্বের যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে এই নির্বাচনটি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে, ১৯৭৫ সালে জাতির জনকের হত্যার সুবিধাভোগী হিসাবে নতুনভাবে আবির্ভূত রাজনৈতিক পক্ষের হাত ধরে রাজনীতি ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার মধ্যে যে চরম সাম্প্রদায়িকতার সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীতে সেটি যেরকম দানবীয় রূপ নেয়, তার থেকে রাজনীতি ও রাষ্ট্রকে বের করার একটা বড় সুযোগ।

বক্তারা আরও করেন, ২০০১ সালের নির্বাচনোত্তর সময়ে নির্বাচনে জয়ী হওয়া সদ্য ক্ষমতায় আরোহনকারী দলের ক্যাডার বাহিনী কর্তৃক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর পরিচালিত সেই তাণ্ডব কিছুতেই বাঙালি ও বাংলাদেশের সংস্কৃতির সঙ্গে যায় না। তারপর ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারিতে নির্বাচন প্রতিহত করার নামে ওই ধর্মশ্রয়ী রাজনৈতিক পক্ষ জামায়াত-বিএনপি সংঘবদ্ধভাবে সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে কী দানবীয় কর্মকাণ্ড করেছে তা কারো ভুলে যাওয়ার কথা নয়।

বক্তারা বলেন, আজ বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত ১৫ বছর বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ওপর দেশ পরিচালিত হচ্ছে বিধায় রাজনীতি ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতির সঙ্গে বহুল আকাঙ্ক্ষিত সম্প্রীতির বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথেও অনেক দূর আমরা এগিয়েছি।

সভায় বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল, শিক্ষক ও সাহিত্যিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবির, নারী প্রগতি সংঘ, বীর মুক্তিযেদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, সভাপতি, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, এডভোকেট রানা দাস গুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান ঐক্য পরিষদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অবঃ) মোহাম্মদ আলী শিকদার, যুগ্ম আহ্বায়ক, সম্প্রীতি বাংলাদেশ, খুশি কবির, নির্বাহী পরিচালক, নিজেরা করি, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কাজল কর্মকার, বাংল্লাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান ঐক্য পরিষদ, অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী, চক্ষুবিজ্ঞান বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, সংস্কৃতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিালয়, অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ, অধ্যাপক ড. বিমান চন্দ্র বড়ুয়া, আহ্বায়ক, সম্প্রীতি বাংলাদেশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, নির্মল রোজারিও, ভাইস চেয়ারম্যান, খৃস্টান ধর্মীয় কল্যান ট্রাস্ট, ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয় সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন, অধ্যাপক ড. সুরাইয়া আক্তার, ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কবি আসাদ মান্নান, সাবেক সচিব, নুর সাফা জুলহাস, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, বিপ্লব কুমার দে, সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ, ব্যারিস্টার ফারজানা মাহবুব, শাহরিয়ার মোল্লা, সাবেক সদস্য, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, ডা. আফতাব ইউসুফ রাজ, বিশিস্ট শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ, জ. এ.এইচ.এম মাহবুবুর রহমান, বঙ্গমাতা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জামালপুর।


শেয়ার করুন

Similar Posts