পটুয়াখালীকে জনবান্ধব ও স্মার্ট পৌরসভায় রূপান্তর করাই শফিকুলের স্বপ্ন!

পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে ডা. মো. শফিকুল ইসলাম তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করছেন। ছবি: সংগৃহীত।
শেয়ার করুন

পটুয়াখালীকে জনবান্ধব, পরিবেশ বান্ধব, সন্ত্রাস-মাদকমুক্ত ও স্মার্ট পৌরসভায় রূপান্তর করাই ডা. মো. শফিকুল ইসলামের স্বপ্ন, তার অঙ্গীকার।

মেয়র হিসেবে বিগত ৮ বছর (২০১১-১৮) দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি একটি আধুনিক পৌরসভা বিনির্মাণে পৌরবাসীর চাহিদা ও দাবি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তার নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।


বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ডা. মো. শফিকুল ইসলাম তার নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ‘পটুয়াখালী পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ও সমস্যা, যেমন -বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স, পানির বিল এবং ট্রেড লাইসেন্স ফিসহ অন্যান্য ফি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সহনীয় মাত্রায় পুনঃনির্ধারণ করা, বছরব্যাপী মশক নিধন কার্যক্রম, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শহরের যানজট নিরসনসহ অতি জোয়ারের কারণে শহরকে প্লাবিত হওয়া থেকে রক্ষা করা, দখলমুক্ত নগরী, দূষণ রোধ, নিরাপদ সড়ক, উচ্ছেদকৃতদের পুনর্বাসন, বস্তিবাসী ও স্বল্প আয়ের পরিবারের জন্য পৌরসভার পানি সরবরাহ, ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স, পানির বিল, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন ও ট্রেড লাইসেন্সের মতো বিষয়গুলো ইশতেহারে প্রাধান্য দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘লাইসেন্সসহ অন্যান্য নাগরিক সেবা প্রদান এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে জন ও পরিবেশ বান্ধব, স্মার্ট ও আধুনিক পটুয়াখালী পৌরসভা গড়তে গেলে প্রতিটি এলাকা, পাড়া, মহল্লার দিকে আলাদাভাবে নজর দিতে হবে। এলাকাভিত্তিক সমস্যা শনাক্ত করে সেগুলোর স্থায়ী সমাধানের মধ্য দিয়ে এলাকার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। এই এলাকাভিত্তিক পরিবর্তনই শহরের সামগ্রিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। ফলে এই শহরে বসবাস করা মানুষগুলো সব ধরনের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।’

‘আমার প্রধান লক্ষ্য, এই শহরকে কেবল বসবাস উপযোগী নয়, বরং শহরবাসীর জীবনমানের উন্নতি সাধন করা। আমার বিগত মেয়র হিসাবে দায়িত্বপালনের অভিজ্ঞতা এবং উপলব্ধিকে কাজে লাগিয়ে আগামীর আকাঙ্ক্ষিত পটুয়াখালী গড়ার লক্ষ্য অর্জনে আমার নির্বাচনী ইশতেহার পেশ করছি। নগরীর সার্বিক উন্নয়নে আমি কথা দিচ্ছি, আমাকে পুনরায় নির্বাচিত করলে, লক্ষ্য অর্জনে সাধ্যের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করবো।’

এছাড়া শহর প্লাবিত হওয়া থেকে রক্ষার্থে চক্রাকার বাঁধ নির্মাণ করা হবে, যা বাইপাস রাস্তা হিসাবে কাজ করবে। এর মাধ্যমে পণ্যবাহী ট্রাক ও ভারী যানবাহন শহরে প্রবেশ না করেই গন্তব্যে পৌঁছে যাবে। বিগত পাঁচ বছরে অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে হাজার হাজার বৃক্ষ নিধন ও উন্মুক্ত জলাশয় ভরাটের মাধ্যমে (যা সরকার ঘোষিত বিধিমালা পরিপন্থি) শহরের পরিবেশগত যে অপূরণীয় ক্ষতি করা হয়েছে তা পূরণ করার জন্য পৌরসভার নিজস্ব ভূমিসহ সব স্থাপনায় ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে বৃক্ষরোপণ করার জন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা ও পৌরসভা থেকে বিনামূল্যে গাছের চারা সরবরাহ করা হবে। কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো কাজ করা হবে না।

পৌরসভার সব লেক-খালের সংস্কার পৌরসভার পানিতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য পরিকল্পিত ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন করা হবে। ডাম্পিং স্টেশনের মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণ করে ময়লা আবর্জনামুক্ত শহর গড়া ছাড়াও মেয়রের সঙ্গে নাগরিকদের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। পদ্মা সেতুর সুফলে পটুয়াখালী থেকে ঢাকা ও দেশের অন্যান্য স্থানে যাত্রী ও গাড়ীর সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক বিশ্রামকক্ষ ও অপেক্ষার জন্য সব সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত আধুনিক বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হবে।

প্রস্তাবনা অনুযায়ী নতুন গোরস্থান নির্মাণে সরকারি সহযোগিতার জন্য সর্বোচ্চ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। মহাশশ্মানের আয়তন বৃদ্ধি এবং পৌরসভার আওতাভুক্ত সব মসজিদ ও মন্দিরের আধুনিকায়ন করা হবে। পৌরসভার উদ্যোগে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার দরিদ্র মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের জন্য পৌর শিক্ষা বৃত্তি চালু করা হবে। পৌরসভায় ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হবে, যেখানে সর্বস্তরের চাকরিজীবী মায়েরা তাদের সন্তানদের দিনের বেলা নিরাপদে রাখতে পারবেন।

ডা. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি জানি শত সংকট, সীমাবদ্ধতা ও নাগরিক যন্ত্রণাসহ নানাবিধ সমস্যা আছে এ শহরে। পটুয়াখালী পৌরসভা আপনার, আমার, আমরা সবাই একটু সচেতন, আন্তরিক ও উদ্যোগী হয়ে দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত রাখি শহর বিনির্মাণে। তবে অবশ্যই আমি আপনাদের পটুয়াখালী পৌরসভার দৃশ্যমান পরিবর্তন আনতে সক্ষম হব।’

তিনি আর বলেন, ‘এই পথযাত্রায় আমি শহরবাসীর সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে চাই। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রযাত্রায় স্বপ্নের পটুয়াখালী পৌরসভা বাস্তবায়ন করতে চলুন এগিয়ে যাই একসঙ্গে, গড়ে তুলি সবাই মিলে সবার স্বপ্নের আধুনিক পৌরসভা।’

আগামী ৯ মার্চ পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।


শেয়ার করুন

Similar Posts