আমতলীতে মামলা করে বিপাকে বাদী: আসামীরা প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে
মামলা করে বিপাকে পড়েছেন সোহেল রানা নামের এক মামলার বাদী। আসামী সাবেক ইউপি সদস্য শাহীন হাওলাদার ও তার সহযোগীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছেনা। উল্টো বাদী মামলা তুলে না নিলে তাকে আসামীরা প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। প্রাণ ভয়ে বাদী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এমন অভিযোগ সোহেল রানার। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে বাদী সোহেল রানা বরগুনা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। দ্রুত পুলিশ সুপারকে আসামীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন সোহেল। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার পশ্চিম সোনাখালী গ্রামে।
জানাগেছে, উপজেলার পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা তরমুজের ব্যবসা করে আসছেন। এ ব্যবসার জন্য আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য শাহীন হাওলাদার ব্যবসায়ী সোহেল রানার কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে ব্যবসায়ী সোহেল। এতে ক্ষুব্ধ হয় শাহীন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারী আসামী শাহীন হাওলাদার,মাসুদ মৃধা, লিকন মৃধা,তোফাজ্জেল হাওলাদার ও নাফিজ ব্যবসায়ী সোহেল রানাকে মারধর করে এবং তার সঙ্গে থাকা তিন লক্ষ সাত হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে গাজীপুর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে আসামীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সোহেল রানা বাদী হয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী সাবেক ইউপি সদস্য শাহীন হাওলাদারকে প্রধান আসামী করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৫ জনের নামে বরগুনা আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী দ্রুত বিচার আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক এসএম শরিয়ত উল্লাহ মামলাটি আমলে নিয়ে আমতলী থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহন করে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশ মতে আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু মামলাটি এজাহার হিসেবে গন্য করে এসআই (নিরস্ত্র) আলাউদ্দিনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু বাদী সোহেল রানার অভিযোগ এ মামলা করে তিনি বিপাকে পরেছেন।
আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। উল্টো মামলা তুলে না নিলে আসামী মাসুম মৃধা তাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। আসামীদের ভয়ে মামলার বাদী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এমন অভিযোগ তার। তিনি আরো অভিযোগ করেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আলাউদ্দিন আসামীদের পক্ষ নিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করছে না। আসামীদের প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোর কথা তাকে (তদন্তকারী কর্মকর্তা) জানালেও তিনি কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীদের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে মামলার বাদী সোহেল রানা বরগুনা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
সাবেক ইউপি সদস্য আসামী শাহীন হাওলাদার মামলার বাদীকে প্রাণ নাশের হুমকির কথা অস্বীকার করে বলেন, সোহেল রানার সঙ্গে টাকা নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। এর রেশ ধরে বর্তমান ইউপি সদস্য সোলায়মান মৃধার ছেলে মাসুম ও আমার সেজ ভাই তোফাজ্জেল সোহেলের সঙ্গে বেয়াদবি করেছিল। এ বিষয়ে মিমাংশা করে দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, এখন শুনতে পাচ্ছি সোহেল আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
আমতলী থানার এসআই (নিরস্ত্র) আলাউদ্দিন আসামী গ্রেপ্তার না করার কথা স্বীকার করে বলেন, দ্রুত বিচার আদালতে মামলা হলেও ঘটনাটি আসামী গ্রেপ্তার করার মত নয়, বিধায় আসামী গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
বরগুনা পুলিশ সুপার আব্দুস ছালাম বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।