সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে মধু আহরণ উদ্বোধন

শেয়ার করুন

পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে মধু আহরণের উদ্বোধন করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে বুড়িগোয়ালীনি ফরেস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ে পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের আয়োজনে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগীয় বনকর্মতা ড আবু নাসের মোহসীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা ৪ আসনের সংসদ সদস্য এসএম আতাউল হক দোলন।

কলাগাছিয়া ফরেস্ট টহল ফাড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিউল হকের সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শ্যামনগর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা আইয়ুব ডলি, প্রথম আলো পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক কল‍্যাণ বার্নাজি, পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এমকেএম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী, বুড়িগোয়ালীনি ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সহ বিভিন্ন মৌয়াল ও মধু ব্যবসায়ী উপস্থিতি ছিলেন।

বক্তরা বলেন, সাতক্ষীরা সুন্দরবনে যে মধু পাওয়া যায়। এটি আর কোথায় পাওয়া যায় না। হাতে গোনা দুই একজন অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে দুর্নাম হয়েছে। সুন্দরবনের সিংহভাব বাংলাদেশেও ভারতীয় অংশ সমৃদ্ধ। এটি কাটিয়ে উঠতে হবে। তবে সুন্দরবনের আগে তুলনায় সংরক্ষণ করা গেছে। আমাদের বন বাচিয়ে রাখতে হবে। তা নাহলে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে আগামী ১০০ বছর বঙ্গোপসাগরে তলিয়ে যাবে।

সড়ক পথে সুন্দরবন দেখতে চাই। সেজন্য মৌ জাদুঘর করা হয়েছে। সুন্দরবনের অনেকগুলো পর্যটন কেন্দ্র করা হয়েছে। আগামী দিনে আরও করা হবে।

আর আপনাদের সুন্দরবনের গাছ কাটা লাগবে না। ট্যুরিজম শিল্প যত বেশি বিকশিত হবে। ট্যুরিজম শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। যারা হরিণ শিকার করতো। বিষ দিয়ে মাছ শিকার করতো তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরে ঘৃণিত কাজ না করার অঙ্গীকার করেছে। সাতক্ষীরা রেঞ্জে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৫০ কুইন্টাল, ২৮৬ কুইন্টাল। প্রথম দিনে ৬৪জন মৌয়াল পাশ নিয়ে সুন্দরবনের প্রবেশ করেছে। ২৪ জন হরিণ শিকারী ও বিষ দিয়ে মাছ শিকারী আত্মসমর্পণ করেন।

এদিকে ১ এপ্রিল থেকে সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই মধু আহরণ মৌসুম চলবে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত।

তবে জুন মাস থেকে সুন্দরবনের সব ধরনের জলজ ও বনজ সম্পদ আহরণে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় গেওয়ার মধু সংগ্রহ সম্ভব হয় না। এবার বৃষ্টির কারণে সুন্দরবনের গাছে পর্যাপ্ত ফুল ফোটায় চলতি আহরণ মৌসুমে মধু সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা সুন্দরবন বিভাগের।

এবছর সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার কুইন্টাল। আর মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০০ কুইন্টাল। এর মধ্যে শরণখোলা রেঞ্জে ৬০০ কুইন্টাল মধু, ২০০ কুইন্টাল মোম ও চাঁদপাই রেঞ্জে ৪০০ কুইন্টাল মধু, ১০০ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে মধু আহরিত হয় ৮৬৩ কুইন্টাল ও মোম আহরিত হয় ২৫৮.৯৬ কুইন্টাল। শরণখোলা ও চাঁপই থেকে থেকে এবার তিন হাজারের অধিক মৌয়াল সুন্দরবনে মধু সংগ্রহে যাবেন বলে ধারণা কররা হচ্ছে।

সুন্দরবনে গরান ও খলিশা ফুলের মধু ছাড়াও কেঁওড়া ও ছইলা ফুলসহ বিভিন্ন গাছের ফুলের মধু মৌচাক থেকে পর্যায়ক্রমে মধু সংগ্রহ করবেন মৌয়ালরা। এরপর জুন মাসে শুরু হয় গেওয়া ফুলের মধু আহরণ। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ থেকে পাস-পারমিট নিয়ে নৌকায় করে দল বেঁধে মধু আহরণ করতে ম্যানগ্রোভ এই বনে যাচ্ছে মৌয়ালরা।


শেয়ার করুন

Similar Posts