রুমায় ব্যাংক ডাকাতি: যৌথ অভিযানে নেমেছে পুলিশ, বিজিবি সেনাবাহিনী : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন কুকি চিনের একটি গ্রুপ বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত।
আজ বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘কুকি চিন ব্যাংক ডাকাতি ও আগ্নেয়াস্ত্র লুটপাটের ঘটনার সাথে জড়িত। তারা পুলিশ কনস্টেবল, ব্যাংক গার্ড ও আনসারদেরও আঘাত করেছে।’
মন্ত্রী বলেন, এখনো এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমে তারা বিদ্যুতের সাবস্টেশন বন্ধ করে দেয়। তারপর মূল্যবান জিনিসপত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র লুট করতে শুরু করে। পরে তারাবি নামাজ আদায় করে আসার সময় তারা স্থানীয় সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণ করে।’
মন্ত্রী বলেন, তারা আজ থানচিতে কৃষি ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করেছে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ ও বিজিবি অভিযান চালাচ্ছে।
বান্দরবানের রুমা এবং থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানে নেমেছে পুলিশ ও বিজিবি। তাদের সঙ্গে যোগ দেবে সেনাবাহিনীও।
তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যা যা প্রয়োজন আমরা তা করব। পুলিশ ও বিজিবি তাদের দায়িত্ব পালন করছে। প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও কুকি চিন ও অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযানে যোগ দেবে।’
কামাল বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের বিশেষ শাখার প্রধান মো. মনিরুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখন বান্দরবানে রয়েছেন।
সীমান্তে হত্যার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সীমান্তে হত্যা বন্ধে ভারতের সঙ্গে আলোচনা চলছে। মূলত অবৈধ ব্যবসার উদ্দেশ্যে যাতায়াতকারী উভয় দেশের নাগরিকরাই এ ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বান্দরবানের রুমায় ভল্ট ভেঙে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লুট করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় ব্যাংকের ম্যানেজার অপহরণ এবং নিরাপত্তায় থাকা ১০ পুলিশ ও ৪ আনসার সদস্যের অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।
এক দিন পরই আজ (বুধবার) থানচিতে সোনালী এবং কৃষি ব্যাংকের শাখায় ডাকাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে থানচি বাজারে দুটি চাঁদের গাড়িতে পাহাড়ের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা এসে দুই ভাগে ভাগ হয়ে থানচি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ভেতরে ঢোকে। এ সময় সন্ত্রাসীরা দুই ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটি কক্ষে বন্দি করে। এরপর সোনালী ব্যাংক থেকে নগদ ১৫ লাখ টাকা ও কৃষি ব্যাংকে গ্রাহকের আড়াই লাখ টাকা ও বেশকিছু মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
বিষয়টি নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশের নজরে এলে তারা প্রতিহতে এগিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ছাড়া ঠিক কী পরিমাণ টাকা তারা লুট করেছে, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।
বান্দারবান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বলেন, দুটি গাড়িতে অস্ত্রধারীরা এসে হামলা চালিয়েছে। তবে এটা ডাকাতির উদ্দেশ্যে হামলা কি না, সেটা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি করেছে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।