বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি মিলে টেন্ডার ছাড়া বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রি!
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহসিন মোল্লা ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন মোল্লা মিলে কমিটির রেজুলেশন ও টেন্ডার ছাড়াই বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও অভিভাবকরা এমন অভিযোগ করেন। দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার হলদিয়া হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার হলদিয়া হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতাধিক পুরাতন গাছ রয়েছে। ওই গাছের মধ্যে দুটি বৃহৎ চাম্বল গাছ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন মোল্লা ও প্রধান শিক্ষক মহসিন মোল্লা কমিটির রেজুলেশন ও টেন্ডার ছাড়াই বিক্রি করে দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান এ গাছের মুল্য আনুমানিক ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু কত টাকায় বিক্রি করেছেন তা কেউ জানেন না? এ গাছ বিক্রি করায় এলাকাবাসী, অভিভাবক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা এ বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রাথমকি শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছেন। দ্রুত ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রধান শিক্ষক মহসিন মোল্লা ও সভাপতি জাকির হোসেন মোল্লার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, দুই বৃহৎ চাম্বল গাছ কেটে ফেলে রেখে দিয়েছেন। কাটা অবস্থায় গাছের গোড়া ও গাছ পড়ে আছে। স্থানীয়রা জানান সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক যোগসাজসে গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, সভাপতি প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি আইনের তোয়াক্কা করছেন না। আইন কিনা তার পকেটে। আমরা নিষেধ করেছিলাম কিন্তু তিনি ও প্রধান শিক্ষক বলেন গাছ কাটলে কি হয়, দেখা যাবে?
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মোঃ সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, কমিটির সিধান্ত ছাড়াই প্রধান শিক্ষক গাছ কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন। এটা প্রধান শিক্ষক নেহায়েত অন্যায় করেছেন। তিনি আরো বলেন, এর আগেও বেশ কিছু বিদ্যালয়ের গাছ এভাবে বিক্রি হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মহসিন মোল্লা বলেন, প্রাচীর নির্মাণ করায় গাছ কাটতে হয়েছে। প্রাচীর থেকে গাছ অনেক দুরে তবে গাছ কাটতে হলো কেন? এমন প্রশেরন জবাব তিনি এগিয়ে যান। তিনি বলেন, যারা প্রাচীন নির্মাণ করায় টেন্ডার পেয়েছে তারা গাছ কেটেছে।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, উন্নয়নমুলক কাজ করতে গেলে গাছ কাটা দোষের কিছু নয়। কমিটির রেজুলেশন ও টেন্ডার ছাড়া গাছ কাটা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সফিউল আলম বলেন, কমিটির রেজুলেশন অথবা টেন্ডার ছাড়া কোন ক্রমেই বিদ্যালয়ের সরকারী গাছ বিক্রি করা যাবে না। বিষয়টি আমি জেনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান বলেন, বিষয়টি জেনেছি। খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।