ঘূর্ণিঝড় রেমাল: কলাপাড়ায় ১০ নম্বর বিপদ সংকেত জারি, আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
আজ রোববার দুপুর ১২টায় এটি পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে আবস্থান কলছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কি.মি. এর বাতাসের একটানা গতিবেগ ৯০-১২০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি রাত ৯ টা থেকে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তাই পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সকাল থেকে উপকূলের বিপদসংকুল এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মোঃ মহিববুর রহমান এমপি পটুয়াখালী জেলা ও কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখছেন, যাতে উপকূলের একজন মানুষেরও জীবন, সম্পদ হানির ঘটনা না ঘটে, কলাপাড়া দুর্যোগ ও ত্রাণ অধিদপ্তর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলার কাউয়ারচর এলাকায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে সাঁতার কেটে ফুফু মাতোয়ারা বেগমের বাড়ীতে যাওয়ার সময় মো: শরীফ (২৪) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার দুপুরে ধূলাসার ইউনিয়নের কাউয়ারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত শরীফ অনন্তপাড়া এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে। মহিপুর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপকূলের দুর্যোগ প্রবন বেড়িবাঁধ বিচ্ছিন্ন এলাকার কয়েক হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কৃষকের গবাদি পশু সমূহ মুজিব কিল্লা সহ উঁচু স্থানে রাখা হয়েছে। সমুদ্র ও নদ-নদীতে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে গতকাল থেকে নৌপথে মাইকিং করছে কোষ্টগার্ড।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে শনিবার মধ্যরাত থেকে কলাপাড়া উপকূলীয় এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে বইছে প্রবল বাতাস। বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। সৈকতে বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে উপজেলার ধানখালী, দেবপুর, নিজামপুর, চারিপাড়া, বুড়োজালিয়া বেড়িবাঁধের বিধ্বস্ত অংশ দিয়ে পানি ঢুকে বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
কলাপাড়া দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, এখন পর্যন্ত ৬ হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে হয়েছে। এবং তাদের জন্য পর্যাপ্ত শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ খাবার পানি সহ স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। রাতে আশ্রয় কেন্দ্রে আরও মানুষ আশ্রয় নেবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কলাপাড়া ইউনিয়ন মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, ‘রেমালের প্রভাবে উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের কাউয়ারচরে শরীফ নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে উপজেলা প্রশাসন থেকে মৃতের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ ইউএনও রবিউল আরও বলেন,’ উপকূলের বিপদসংকুল এলাকার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা আছে।’