গাজীপুরে সেনাপ্রধান স‌ফিউদ্দীন যা বললেন

শেয়ার করুন

সম্প্রতি সেনা কর্মকর্তাকে নিয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, তা উদ্দেশ্য প্রনো‌দিত বলে মন্তব্যে করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম স‌ফিউদ্দীন আহমেদ।

সোমবার (২৭ মে) সকালে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং (বিপসট) এ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তিরক্ষা অপারেশনের প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অব এশিয়া-প্যাসিফিক পিস অপারেশন ট্রেনিং সেন্টার (এএপিটিসি) এর ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভা এবং ওয়ার্কশপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবা‌দিকদের প্রশ্নের জবাবে তি‌নি একথা বলেন তিনি।

এসময় অসাধু উদ্দেশ্য নিয়ে উদ্দেশ্যে প্রতিবেদন প্রকা‌শিত হয়েছে উল্লেখ করে সেনাপ্রধান তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। পাশাপা‌শি স‌ঠিক সময়ে প্রতিবেদনটি ভুলপ্রমা‌নিত করতে ‌সেনাবা‌হিনী সক্ষম হবে বলেও জানিয়ে বলেন, এই প্রচেষ্টা আজকের নয়। ২০১৩ সালেও এরকম একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিলো। এই প্রচেষ্টা তখনো ছিল। এখনো আছে। আমাদের পেশাদারিত্ব এবং সর্বোপরি জাতিসংঘ পরিমণ্ডলে আমাদের দায়িত্ব যেভাবে পালন করে এসেছি, সেভাবে করে এই সমস্ত ষড়যন্ত্রের সঠিক জবাব দিতে পারবো, ইনশাল্লাহ।

ওই অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ তথা বিপসটে প্রথমবারের মতো এএপিটিসি এর বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজন নি:সন্দেহে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ত্যাগ, অবদান ও গৌরবোজ্জ্বল অর্জনের এক অনন্য স্বীকৃতি।

বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কূটনৈতিক ও সামরিক উভয় অঙ্গনে বাংলাদেশের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শান্তি কেন্দ্রিক উন্নয়নের যে মডেল জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে উপস্থাপন করেছিলেন, তা আজকের সংকটময় নিরাপত্তা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আরো বেশি প্রাসঙ্গিক। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অনুকরণীয় পেশাদারিত্ব ও সফলতার চিত্র তুলে ধরেন এবং শান্তিরক্ষীদের উঁচুমানের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করনে বিপসটের অবদানের প্রশংসা করেন।

চারদিন ব্যাপী এই সম্মেলনের আলোচনা ফলপ্রসূ হবে এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে যা এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোকে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন সেনা প্রধান।
এএপিটিসি শান্তিরক্ষী অপারেশন, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার সাথে জড়িত নীতিনির্ধারক, গবেষক, শান্তিরক্ষী, প্রশিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ এবং প্রতিষ্ঠানসমূহের একটি অনন্য প্লাটফর্ম। এএপিটিসি’তে বর্তমানে ২৪টি সদস্য রাষ্ট্র ও ২টি পর্যবেক্ষক দেশ রয়েছে। গত ২০২৩ সালের বার্ষিক সম্মেলনে বিপসটের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ এক বছরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই সংস্থার সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, বাংলাদেশে নিযুক্ত ডিফেন্স-মিলিটারি অ্যাটাশেগণ, ঊর্ধ্বতন সামরিক, আধা-সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা, জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থার প্রধান ও প্রতিনিধি, এএপিটিসি এর সদস্যভূক্ত ২৬টি দেশের প্রায় ৫০ জন বিদেশি প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তিরক্ষা অপারেশনের প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত সকল প্রতিষ্ঠান সমূহের আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অব এশিয়া-প্যাসিফিক পিস অপারেশন ট্রেনিং সেন্টার (এএপিটিসি) এর বার্ষিক সাধারণ সভা এবং ওয়ার্কশপ নানা দিক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তির উন্নয়ন ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ ঝুঁকির কারণে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা পরিবেশ অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠেছে। এই পরিবর্তিত নিরাপত্তা পরিস্থিতির গতি প্রকৃতি মূল্যায়ন ও তা মোকাবিলায় ভবিষ্যত করণীয় নির্ধারণ এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের রূপরেখা প্রণয়ন ছিল এবারের এএপিটিসি’র বার্ষিক সাধারণ সভার মূল উদ্দেশ্য। জাতিসংঘের অধীনে এ পর্যন্ত ১৯টি দেশের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ১৬৮ জন সেনা কর্মকর্তা শহীদ হয়েছেন।


শেয়ার করুন

Similar Posts