ঘুর্ণিঝড়ে আমতলীতে তিন শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত, বাঁধ ভেঙ্গে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্ধি
ঘুর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে আমতলী উপজেলায় তিন শতাধিক ঘর বিধস্থ ও সহস্রাধিক ঘর আংশিক বিধস্থ, অন্তত দুই লক্ষাধীক গাছপালা উপড়ে পরেছে এবং সহস্রাধিক পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এতে অন্তত পঞ্চাশ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। চারটি স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে ৫০ হাজার মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পরেছে।
জানাগেছে, ঘুর্র্ণিঝড় রেমাল গত রবিবার সন্ধ্যা নাগাল উপকুলীয় অঞ্চলে আঘাত হনে। রবিবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত রাত-ভর চালায় ঘুর্ণিঝড়ের তান্ডব। দমকা বাতাসের সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এতে মাটি আগলা হয়ে তিন শতাধিক ঘর বিধ্বস্থ এবং সহ¯্রাধিক ঘর আংশিক বিধ্বস্থ হয়েছে। উপড়ে পরেছে অন্তত দুই লক্ষাধিক গাছপালা। পশুরবুনিয়া, ঘোপখালী, পশ্চিম সোনাখালী, সোনাউডা বাঁধ এবং আঙ্গুলকাটা সুইস গেট ভেঙ্গে ও ইসলামপুর গ্রামের বাঁধ গড়িয়ে ভিতরে পানি প্রবেশ করেছে।
এতে আড়পাঙ্গাশিয়া, আঠারোগাছিয়া, হলদিয়া, আমতলী সদর ও গুলিশাখালী ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে গেছে। ওই পাঁচ ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পরেছে। ভারী বর্ষণে কুকুয়া ও চাওড়া পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার নিন্মাঞ্চলের মানুষ ভোয়ার-ভাটার সঙ্গে যুদ্ধ করে চলছে। এছাড়া পানিতে উপজেলার অন্তত সহস্রাধিক পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। সব মিলেয়ে উপজেলার অন্তত ৫০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাধমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
অপর দিকে এ বন্যায় আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বারেক চৌকিদারসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। রবিবার সকাল থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অর্থ্যাৎ ৩৬ ঘন্টার বিদ্যুৎ বিছিন্ন ছিল। এতে আমতলী উপজেলার সাড়ে তিন লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তিতে দিনাতিপাত করছে। অপর দিনে সাইক্লোণ সেল্টারে আশ্রয় নেয়া ১০ হাজার মানুষকে উপজেলা প্রশাসন খাবার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন বলে জানান সিপিপির টিম লিডার রিপন মুন্সি।
আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য লতিফ মিয়া বলেন, রেমালের আঘাতে আমার ঘরটি বিধ্বস্থ হয়ে গিয়েছে। এতে আমার অন্তত পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
শাহজাহান তালুকদার বলেন, বাতাসের তান্ডবে আমার ঘরটি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গিয়েছে।
ইসহাক মুসুল্লী বলেন, পশুরবুনিয়া ও ঘোপখালী বাঁধ ভেঙ্গে আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পশুরবুনিয়া এলাকার তিন শতাধিক পরিবারের ঘর বাড়ি পানিতে ডুবে গেছে।
সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা বলেন, পশ্চিম সোনাখালী বাঁধ ভেঙ্গে আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবয়ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ জামাল হুসাইন বলেন,ঘুুর্ণিঝড় রেমালে উপজেলার তিন শতাধিক ঘর বিধস্থ এবংসহস্রাধিক ঘর আংশিক বিধ্বস্থ হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে তথ্য পাওয়া গেছে, এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। তিনি আরো বলেন, অগনিত গাছপালা উপড়ে পরেছে। পানিতে প্লাবিত হয়ে সহ¯্রাধীক পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ক্ষয় ক্ষতির তালিকা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা অন্তত ১০ হাজার মানুষকে খাবার ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।