ঈদ-উল-আযহার ছুটিতে পর্যটক বরনে প্রস্তুত সাগর কন্যা কুয়াকাটা
ঈদ-উল-আযহার সরকারি ছুটিতে পটুয়াখালীর পর্যটন নগরী সাগর কন্যা কুয়াকাটা এখন পর্যটক বরণ করতে প্রস্তুত। প্রিয়জনদের সাথে নিয়ে সমুদ্র সৈকতে ডুব সাঁতারে ছুটে আসবেন পর্যটকরা, এমন প্রত্যাশা পর্যটন ব্যবসায়ীদের। কিন্তু কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল ও রিসোর্ট গুলোতে এখন পর্যন্ত কাঙ্খিত অগ্রিম বুকিং হয়নি। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠবে কুয়াকাটা সৈকত। আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় বাড়ানো হয়েছে পুলিশের নজরদারি, থাকছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত। জোরদার করা হয়েছে ব্লু গার্ড সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত উদ্ধার কার্যক্রম।
শনিবার(১৫ জুন) বিকেলে কুয়াকাটার বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেল, রিসোর্ট ও বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পর্যটক বরণে পুরোপুরি প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এখন পর্যন্ত আশানুরূপ বুকিং না থাকায় কিছুটা হতাশায় ভুগছেন তারা। তবে ঈদের পরে পর্যটক আসবে বলেই বিশ্বাস করছেন তারা । যারা ঘুরতে আসবেন, তাদের জন্য পর্যটন এলাকাগুলো আরও আরামদায়ক ও মনোরম করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পর্যটকদের সেবা দেয়া ১৬টি পেশার ব্যবসায়ী ও কর্মীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা এবং নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি। তবে ঘূর্ণিঝড় রেমাল এবং অতিরিক্ত তাপদাহের প্রভাবে এ বছর আশানুরূপ পর্যটক আসেনি কুয়াকাটায়। বর্ষার আগে ঈদকে কেন্দ্র করে পর্যটক আসবে কুয়াকাটায় এটাই সকলের প্রত্যাশা।
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা(টোয়াক) এর জয়েন্ট সেক্রেটারি আবুল হোসেন রাজু বলেন, বর্তমানে হোটেল-মোটেলগুলো ধুয়ে মুছে একবারে পরিপাটি করা হয়েছে। তবে তেমন কোন পর্যটক না থাকায় সৈকত দীর্ঘদিন ফাঁকা, পুরো এলাকা ঝকঝক করছে। বর্ষার শুরুতে সৈকতে উঁচু উঁচু ঢেউ, এ দৃশ্য নজর কাড়বে সব বয়সী মানুষের।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন এর সভাপতি আব্দুল মোতালেব শরীফ বলেন, প্রতিবছর এইসময় আমাদের অধিকাংশ হোটেল এবং রিসোর্ট গুলোর রুম বুকিং হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর এখন পর্যন্ত কাঙ্খিত বুকিং নেই। তবে এখন পর্যন্ত আমাদের হোটেলের ৫০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। আশা করছি কুয়াকাটার সব হোটেল গুলোতেই বুকিং বাড়বে এবং ঈদ পরবর্তী সময়ে পর্যটকে মুখরিত থাকবে কুয়াকাটা।
কুয়াকাটা সী বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, ঈদের ছুটিতে বাড়তি পর্যটক আগমনের সম্ভাবনা মাথায় রেখে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত তৎপরতার পাশাপাশি তিনজন অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট, স্কাউটের প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও সৈকতে রেসকিউ টিম প্রস্তুত থাকবে। বাড়তি ভাড়া আদায় প্রতিরোধ ও হয়রানি বন্ধে নজরদারি করা হবে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং সেবা দেয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। লেম্বুরবন থেকে রামনাবাদ চ্যানেল পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকবে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। পর্যটকদের সেবায় জল ও স্থলপথে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।