উজানের ঢলে ডুবছে সিলেট, আশ্রয়ের খোঁজে মানুষ
উজানের ঢলে ডুবছে সিলেট। আর টানা বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা। গোয়াইনঘাট উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কানাইঘাট পৌর শহর কোমর সমান পানিতে তলিয়ে গেছে। সুরমা পানি উপচে তলিয়ে গেছে সিলেট নগরের অর্ধশতাধিক এলাকা। কোনো মতে পানিবন্দি অবস্থায় ঈদ কাটানোর পর এখন মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়ের খোজে ছুটছে।
মঙ্গলবার বিকেল ৫ টায় সর্বশেষ খবরে জানা গেছে; উজান থেকে ঢল নামা অব্যাহত ছিলো। কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় ঢলের তীব্র স্রোত রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে; সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপদসীমা থেকে ১৩৩ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার, সারিঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার এবং নদীর সারি গোয়াইন পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জসহ কয়েকটি উপজেলার গ্রামীণ অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সিলেটে ২৪ ঘন্টায় মঙ্গলবার ৩ টা পর্যন্ত ২১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী দুইদিন সিলেটে টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। ইন্ডিয়া মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের তথ্যমতে- ভারতের চেরাপুঞ্জিতে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ৬টা পর্যন্ত ৩৯৫ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে দ্রুত বাড়ছে সিলেটের নদ-নদীর পানি। এতে করে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, সদর উপজেলার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
সিলেট জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে; জেলার ৮৭টি ইউনিয়নের ৮৬৪ গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। ৬১৯ টি আশ্রয় কেন্দ্রে চার হাজার মানুষ উঠেছে। পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ লাখ।
সিলেট নগরে ঢুকছে বন্যার পানি। সুরমা নদীর পানি উপচে ইতিমধ্যে ১০ টি ওয়ার্ডের ৫০টি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। দক্ষিন সুরমার বরই কান্দিতে থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পানি ঢুকেছে। বিকেলে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ওই কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। সিলেট নগরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায়ও আশ্রয়ের জন্য ছুটছে মানুষ। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মানবজমিনকে জানিয়েছেন- সন্ধ্যায় সিটি করপোরেশনে জরুরী সভার আহবান করা হয়েছে।
আজ সন্ধ্যা থেকে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর নগর ভবনের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা মাঠে থাকবেন। ইতিমধ্যে বন্যার্ত মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।