কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে ঢাবি ছাত্ররা, শাহবাগে যান চলাচল বন্ধ
কোটা বাতিলের দাবিতে আবারো আন্দোলনে রাজপথে নেমেছেন ছাত্ররা। তারা শাহবাগ অবরোধ করে রাখায় ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে ফের আন্দোলনে নেমেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
এদিকে আজ শনিবার এ সংবাদ সম্মেলনে কোটা এবং পেনশনবিরোধী আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কোটা সংস্কার এবং পেনশনবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির সমর্থন আছে।
শনিবার (৬ জুলাই) বেলা ৩টায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করতে থাকেন। এ সময় ঢাবির বিভিন্ন হল থেকে আলাদা ব্যানারে মিছিল নিয়ে কোটা আন্দোলনে যোগ দেন তারা৷
পরে বিকেল পৌনে ৫টায় চতুর্থ দিনের মতো শাহবাগ অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুর আরেকবার, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, “কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন৷
এদিকে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিতে চাওয়া শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হল থেকে বের হতে দেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। বরং কোটা বিরোধী এই কর্মসূচির সময়েই মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কর্মসূচি রেখে সকলকে জোরপূর্বক সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিল শুরুর আগে কোটা আন্দোলনের এক সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ সালেহীন অয়ন বলেন, সূর্যসেন হলের গেটে ছাত্রলীগ অবস্থান নিয়েছে। তারা কাউকে বের হতে দিচ্ছে না।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা আজ তিনটা থেকে আবার বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন কলেজ এবং বুয়েট ক্যাম্পাসে মিছিল শেষে শাহবাগে মিলিত হব এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। পরবর্তীতে আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
শিক্ষার্থীদের ৪ দফা দাবিগুলো হলো
১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা।
২. পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠনপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যাতীত)।
৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া।
৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।