৩২ নম্বরে আগুন, দুষ্কৃতকারীদের বিচার চাইলেন সোহেল তাজ
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ বলেছেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কিছু দুষ্কৃতকারী ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু জাদুঘর এবং বঙ্গবন্ধু ভবনে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে। আমি এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাই, অতিসত্বর এই দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।’
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন পরিদর্শন শেষে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন তিনি।
পাঁচ মিনিটের ওই ভিডিও বার্তায় সোহেল তাজ বলেন, ‘আমি দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাসার সামনে আমি। এটি বঙ্গবন্ধু জাদুঘর ছিল। এই বাড়িতেই ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
আমি বিবেক দিয়ে পরিচালিত হই। আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি, আমার অবস্থান থেকে যতটুকু পারি করি। সেই আবেগের কারণেই আমি এখানে এসেছি।’
বঙ্গবন্ধু ভবনের আগুন দেওয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না।
কিছু দুষ্কৃতকারী আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য, স্বাধীনতার প্রতীক বঙ্গবন্ধুর সব স্মৃতি ধ্বংস করার জঘন্য ঘটনাটি ঘটিয়েছে।’
বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাসের আলোকে এবং মোড়কে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে মন্তব্য করে সোহেল তাজ বলেন, যাঁরা স্বাধীনতাসংগ্রামে অবদান রেখেছেন, তাঁদের সবার অবদানকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা আবশ্যক। যেমন-হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জিয়াউর রহমানসহ ১১ জন সেক্টর কমান্ডার এবং আরো অনেক হিরো, নায়ক-মহানায়ক যাঁরা আছেন, তাঁদের ইতিহাস আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা দরকার। আমি মনে করি, এই চরিত্রদের নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক হবে না। আমাদের এই অ্যাসেট, যাঁরা আমাদের লিগ্যাসি, তাঁদের আমাদের সংরক্ষণ করে রাখতে হবে ন্যাশনাল অ্যাসেট হিসেবে।
তাঁদের নিয়ে যাতে ভবিষ্যত্ বাংলাদেশে রাজনীতি না হয়, এটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত।’
তানজিম আহমদ সোহেল তাজ বলেন, ‘আজ ছাত্র-জনতা যে আন্দোলন করেছে, তাদের উদ্দেশ্য কিন্তু একটা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, যেখানে সবার অধিকার নিশ্চিত করা হবে, যেখানে সবার বাকস্বাধীনতা থাকবে, যেখানে মেধাই হবে মাপকাঠি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই কিন্তু সেই চেতনা। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা এই আদর্শটাকে বাস্তবায়ন করতে পারিনি।’
শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং সংরক্ষণ করায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে সোহেল তাজ বলেন, ‘সবার প্রতি আহ্বান, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে দেশটাকে ভালোবাসতে হবে। আমি রাজনীতিতে নেই। আমিও চেষ্টা করছি আমার অবস্থানে থেকে যতটুকু পারি বলার। রিমেম্বার, আমরা মরাল কম্পাস যদি হারিয়ে ফেলি, তাহলে কোনো জাতি কোনো দিনও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।’