গাজীপুরে শেখ হাসিনা- কাদেরের নামে আরো হত্যা মামলা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৫৫ জনের নামে গাজীপুরে আরো একটি মামলা হয়েছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানায় মামলাটি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় গত ২০ জুলাই নজরুল ইসলাম (৩২) নিহতের ঘটনায় তার স্ত্রী পূর্নিমা বেগম
বাদী হয়ে বুধবার (২৮ আগস্ট) মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও দুইশো জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক, সাবেক এমপি জাহিদ আহসান রাসেল, মেহের আফরোজ চুমকি, সিমিন হোসেন রিমি, রুমানা আলী টুসি, আখতার উজ্জামান, পুলিশের সাবেক আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান, সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান মতি, আসাদুর রহমান কিরন, আফজাল হোসেন সরকার রিপন, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেলসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সিটি করপোরেশনের কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে আসামি করা হয়েছে।
বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, নিহত নজরুল ইসলাম (৩২) সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানার বারইভাগ এলাকার মো. জামাল শেখের ছেলে। তিনি গাজীপুর মহানহগরের বাসন থানার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার শাহাবুদ্দিন মন্ডলের বাসায় ভাড়া থাকতেন।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে গত ২০ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে তার স্বামী নজরুল ইসলাম ঢাকা-ময়মনসিংহগামী মহাসড়কের পূর্বপাশে বাসন থানাধীন চান্দনা এলাকায় পশমী সোয়েটার গামেন্টসের পাকা রাস্তার ওপর এসে সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ চলাকালে মামলার প্রথম ১৬ জন আসামির নির্দেশে অন্যরা তাদের সঙ্গে থাকা বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, লোহার রড, রামদা, ছেন, চাপাতি, কোবাসহ মারাত্মক দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর অতর্কিতভাবে হামলা করে। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরীভাবে কিল, ঘুষি মেরে, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে আঘাত করে এলোপাথারী মারধর এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে একাধিক আন্দোলনকারীদের শরীরের নীলাফুলা, জখমসহ গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। এক পর্যায়ে বিবাদী আফজাল হোসেন সরকার রিপন ও কামরুল আহসান সরকার রাসেলের উপস্থিতে তাদের হুকুমে ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্রধারী এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত বিবাদীরা ছাত্র জনতাকে লক্ষ্য করে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়িভাবে গুলি ছুড়িতে থাকে। ওই সময় বিবাদীদের ছোড়া গুলিতে নজরুল ইসলাম তার পিঠের ডান পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন।
পরে তাৎক্ষণিক স্বামীর মরদেহ নিয়ে শ্বশুরবাড়ী সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানাধীন বারইবাগ গ্রামে দাফন সম্পন্ন করেন। স্বামীর মৃত্যুতে পরিবারের লোকজন মানসিকভাবে বিপর্যন্ত হওয়ায় এবং বর্তমানে দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি অস্বাভাবিক থাকায় উক্ত আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে থানায় এসে এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করেন।