রমনায় মতিয়া চৌধুরীর জানাজা সম্পন্ন

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাইনুদ্দীন হাসান চৌধুরী
শেয়ার করুন

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, জাতীয় সংসদের উপনেতা ও সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর রমনা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে তার বাসভবনের সামনে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে মতিয়ার চৌধুরীকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স তার বাসভবন রমনা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে পৌঁছায়। সেখানে শেষ বিদায় জানাতে ভিড় করেন তার ভক্ত-অনুসারী ও স্বজনরা। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর সেখানে জানাজা সম্পন্ন হয়।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, অগ্নি কন্যা বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়া চৌধুরীর জানাজার নামাজে আমরা অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাইনুদ্দীন হাসান চৌধুরী।

মতিয়া চৌধুরীর ভাই মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, আজ বাদ যোহর গুলশান আযাদ মসজিদে আরেকটি জানাজা শেষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে মতিয়া চৌধুরীকে। এজন্য নতুন জায়গা চাওয়া হয়েছে সিটি করপোরেশনের কাছে। জায়গা পেলে সেখানে দাফন করা হবে। না পেলে তার স্বামী বজলুর রহমানের কবরে দাফন করা হবে।

শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন মতিয়া চৌধুরী। তার নির্বাচনী এলাকার মানুষের দাবি থাকলেও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তার মরদেহ সেখানে নেয়া হবে না বলেও জানান মাসুদুল।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মতিয়া চৌধুরী।

আওয়ামী লীগের প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ ১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ব্যক্তিজীবনে ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মতিয়া চৌধুরী।

ইডেন কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ১৯৬৫ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন মতিয়া চৌধুরী। ১৯৬৭ সালে ‘অগ্নিকন্যা’ নামে পরিচিত মতিয়া পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে (ন্যাপে) যোগ দেন এবং এর কার্যকরী কমিটির সদস্য হন। ১৯৭০ ও ১৯৭১ এর মাঝামাঝি সময়ে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, প্রচারণা, তদবির এবং আহতদের সেবায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলেন।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছিলেন তিনি। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সময়কালে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার হন মতিয়া চৌধুরী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেয়।

শেরপুর-২ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য ১৯৯৬ ও ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মতিয়া চৌধুরী। এছাড়া ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। সব’শেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিতে সংসদ উপনেতার দায়িত্ব পান। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত হলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।


শেয়ার করুন

Similar Posts