শিক্ষক আছে, শিক্ষার্থী নেই-লাখ টাকা বেতন নিচ্ছেন শিক্ষকরা

শেয়ার করুন

শিক্ষক-কর্মচারী আছেন চার জন কিন্তু শিক্ষার্থী নেই। চার শিক্ষক- কর্মচারী মাসে বেতন তোলেন প্রায় এক লক্ষ টাকা। স্থানীয়দের অভিযোগ বছরের পর বছর এমন অবস্থায় চললেও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অজ্ঞাত কারনে এর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হলেও ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। এমন বিদ্যালয় বিলুপ্তির দাবী এলাকাবাসীর। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া হরিদ্রাবাড়ীয়া একতা নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

জানাগেছে, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের হরিদ্রাবাড়ীয়া এলাকায় ১৯৮৫ সালে কলাগাছিয়া হরিদ্রাবাড়ীয়া একতা নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৮৬ সালে ওই বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিদ্যালয়ে তেমন শিক্ষার্থী ছিল না। গত দুই বছর ধরে ওই বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থী শুন্য হয়ে পড়ে। বর্তমানে বিদ্যালয়ে আব্দুল আজিজ নেছারী, দেলোয়ার হোসাইন, হাবিবুর রহমান শিক্ষক এবং জব্বার মিয়া কারনিক হিসেবে কর্মরত আছেন। কিন্তু বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী নেই। শিক্ষক-কর্মচারীরা মাঝে মধ্যে বিদ্যালয়ে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান। কাগজে- কলমে খাতায় শিক্ষার্থী থাকলেও বাস্তাবে কোন শিক্ষার্থী নেই।

বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হলেও ওই বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী চারজন প্রতিমাসে সরকারী অনুদানের প্রায় এক লক্ষ টাকা বেতন তোলেন। অভিযোগ রয়েছে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা আলতাফ আকন আওয়ামীলীগ নেতা হওয়ায় প্রভাবখাটিয়ে বিগত দিনে বিদ্যালয় পরিচালনা করেছেন। কেউ কিছু বলতে সাহস পায়নি। এমন বিদ্যালয় বিলুপ্তির দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী না থাকলেও বছরের পর বছর শিক্ষকরা বেতন-ভাতা তুলে নেন। স্থানীয়দের অভিযোগ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয়ের এমন দশা জেনেও কার্যকরী কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। অফিস ম্যানেজ করেই তারা বছরের পর বছর এভাবে চলে আসছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, কবে যে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী এসেছে তা মনে পড়ে না।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। ময়লা আবর্জনায় স্তুপ আকারে পড়ে আছে, বিদ্যালয়ের চেয়ার, টেবিল ফাঁকা। জাতীয় পতাকা টানানো আছে।

বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, বিদ্যালয় আশে পাশে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় ছাত্র-ছাত্রী পাওয়া বড় মুশকিল। তাই বিদ্যালয়ে এ বছর কোন শিক্ষার্থী নেই।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল আজিজ নেছারী বলেন, আমাদের আর লজ্জা দিয়েন না। শিক্ষার্থী না থাকলে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করবে কিভাবে? ছাত্র-ছাত্রী সংগ্রহের চেষ্টা করছি কিন্তু পাচ্ছি না।

তিনি আরো বলেন, অনেক সমস্যায় আছি আমাদের মাফ করে দেন।

গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, নামে মাত্র বিদ্যালয় আছে। বাস্তবে শিক্ষার্থী বলতে কিছুই নেই।

তিনি আরো বলেন, ওই বিদ্যালয়ে চলে মোটা অংকের টাকায় নিয়োগ বানিজ্য।

আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ অলি আহাদ বলেন, আমি আদালতে আছি। পরে কথা হবে বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি যে, ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নেই। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ তারেক হাসান বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের বিষয়ে অবগত হবো। তার পরে ওই বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, খোজ খবর নিয়ে ওই বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোঃ হোসাইন আলী কাজী
আমতলী-বরগুনা
০১৭৪০৮৪৬৮১১
আমতলীতে মামলার বাদীর হাজতবাস
আসামী খালাস।
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
একটি মিথ্যা গাছকাটা মামলার বাদী মাসুম তালুকদারকে বিকেল পাচটা পর্যন্ত হাজতবাস এবং আসামী মোঃ ইফতেখায়রুল রাসেল ও নৈশ প্রহরী রাজু তালুকদারকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ রাকিবুল হাসান বৃস্পতিবার এ আদেশ দেন। এ ঘটনায় আদালত প্রাঙ্গণে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে এক একর জমি দান করেন নাদের তালুকদার ও তার সহযোগীরা। ওই জমির মধ্যে থেকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৬৫ শতাংশ জমি ভোগদখল করে আসছেন। বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোঃ ইফতেখায়রুল রাসেল অবশিষ্ট জমি উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। এতে ক্ষুব্ধ হন জমি দাতারা। এ ঘটনায় মাসুম তালুকদার বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক রাসেল ও নৈশ প্রহরী রাজু তালুকদারকে আসামী করে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিথ্যা গাছকাটা মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার এ মামলায় আসামী শিক্ষক রাসেল ও রাজু আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালতের বিচারক দীর্ঘ শুনানী শেষে মিথ্যা মামলা দায়ের করায় বাদী মাসুম তালুকদারকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত হাজত বাসে থাকার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে দুই আসামীকে মামলা থেকে অব্যহতি দিয়ে মামলাটি খারিজ করে দেন। বিচারকের এমন ঘটনার আদালত প্রাঙ্গণে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আসামী পক্ষের আইনজীবি সৈয়দ-নুহু-উল আলম নবীন বলেন, মামলাটি মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় বিচারক মামলার বাদীতে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত হাজতবাসে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে দুই আসামীকে মামলা থেকে অব্যহতি দিয়ে মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন।
মোঃ হোসাইন আলী কাজী
আমতলী-বরগুনা
০১৭৪০৮৪৬৮১১
আমতলীতে ডাকাতি শেষে ফেরার পথে
একজনকে কুপিয়ে জখম।
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
ডাকাতি করে ফেরার পথে ডাকাতদল নেপাল সিকদার (৪৫) নামের একজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। আহত নেপালকে স্বজনরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার ঘটখালী গ্রামে বুধবার দিবাগত রাতে।
জানাগেছে, উপজেলার ঘটখালী গ্রামের অংশুমান সিকদারের বাড়ীতে ৭/৮ জন দলের মুখোশধারী ডাকাত দল ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। টের পেয়ে ওই বাড়ীর লোকজন ঘরের দোতালার দরজা আটকে দেয়। ওই সময় অংশুমান ঘরের টিন পিটিয়ে ডাকাত আসছে বলে ডাকচিৎকার দেয়। ডাক চিৎকার শুনে প্রতিবেশরা বাহিরে নেমে আসে। ওই সময় ডাকাত দল পালিয়ে যাওয়ার পথে নেপাল সিকদারকে দেখতে পায়। পরে তারা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাৎক্ষনিক স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেছেন। অংশুমান দাবী করেন তার ঘর থেকে ডাকাতদল স্বর্নালংকার নিয়ে গেছে ।
অংশুমান বলেন, আমার ঘরের দরজা ভেঙ্গে ৭/৮ জনের ডাকাত দল ঘরে প্রবেশ করে। টের পেয়ে আমরা ঘরের দোতালায় উঠে দরজা আটকে দেই এবং টিন পিটিয়ে ডাক চিৎকার দিলে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, ঘরে থাকা একটি কানের দুল ডাকাতদল নিয়ে গেছে।
আহত নেপাল সিকদারের চাচা নিঠুন সিকদার বলেন, ডাক চিৎকার শুনে নেপাল রাস্তায় নামে। এ সময় ডাকাতদল তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর মেডিকেল অফিসার ডাঃ মনিরুজ্জামান খান বলেন, আহত নেপালের মাথায় ধারালো অন্ত্রেও চিহৃ রয়েছে। তাকে সংঙ্কটজনক অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোঃ হোসাইন আলী কাজী
আমতলী-বরগুনা
০১৭৪০৮৪৬৮১১
আমতলীতে পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা।
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
আমতলী একে হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়।
সহকারী শিক্ষা অফিসার মোসাঃ শাহীনুর আক্তারের সভাপতিত্বে সংবর্ধণা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শফিউল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ আনিসুর রহমান, ইউআরসি ইন্সেটেকটর একেএম শহীদুল্লাহ। বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক একেএম জিল্লুর রহমান, অ্যাড, মাহবুবুর রহমান মঈন ও মাওলানা আব্দুল খালেক প্রমুখ।
মোঃ হোসাইন আলী কাজী
আমতলী-বরগুনা
০১৭৪০৮৪৬৮১১


শেয়ার করুন

Similar Posts