৫৮ তম বিশ্ব ইজতেমা শুরু

শেয়ার করুন

গাজীপুরে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাদ মাগরিব আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হলো ৫৮ তম বিশ্ব ইজতেমা। তাবলীগ জামাতের শুরায়ে নেজাম অর্থাৎ মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের প্রথম পর্বের ইজতেমা হবে দুই ধাপে। প্রথম ধাপ শেষ হবে ২ ফেব্রুয়ারি। দ্বিতীয় ধাপ ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হবে ৫ ফেব্রুয়ারি। প্রতিধাপেই শেষ দিনে হবে আখেরি মোনাজাত।

তাবলীগ জামাতের শুরায়ে নেজামের ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু করেছেন এবারের বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা। চাঁদের হিসেবে নতুন দিনের শুরু হওয়ায় মাগরিবের নামাজের পর বয়ান শুরু হয়।

তিনি আরো জানান, আরবি তারিক অনুযায়ী মাগরিবের নামাজের পরপরই অর্থাৎ সূর্যাস্তের পরপরই আরবি তারিখ পরিবর্তন হয়ে যায়। অর্থাৎ শুক্রবার শুরু হয়ে যায়। সেই হিসেবে বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব আম বয়ানে বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তবে এর আগেও আসরের নামাজের পর মূল বয়ান মঞ্চ থেকে দিকনির্দেশনামূলক বয়ান করা হয়। ইজতেমা ময়দানে তিন দিন ধরে কিভাবে অবস্থান নিবেন এবাদত বন্দি করবেন, সে সকল দিক নির্দেশনা মূলক বয়ান হয়েছে আসরের নামাজের পর।

শুক্রবার বাদ ফজর বয়ান করবেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক। শুক্রবার সকাল ১০টায় বিভিন্ন খিত্তায় খিত্তায় তালিমের আমল হবে। প্রথম ধাপে ৪১টি জেলা এবং ঢাকার একাংশ অংশগ্রহণ করবে। দ্বিতীয় ধাপে প্রায় ২২টি জেলা এবং ঢাকার বাকি অংশ অংশগ্রহণ করবে।
এদিকে সকাল থেকেই টঙ্গীর তুরাগ তীরে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেছেন মুসল্লিরা। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে ইজতেমা ময়দান।

ইজতেমায় অংশ নিতে তাবলীগের মুসুল্লীদের আগমনে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরের ইজতেমা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে। এবারও ইজতেমাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাজার হাজার কর্মী তৎপর রয়েছেন । ইজতোমর সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্টি রয়েছে তাদের। অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে সুবিধার পাশাপাশি রয়েছে কিছু অসুবিধা।

ইসলাম ও ইজতেমার দাওয়াতের কাজে থাকা তাবলীগ জামাতের মুসল্লিগণ এরই মধ্যে প্যান্ডেলে ঠঁাই নিয়েছেন। লাখ লাখ মুসুল্লীর অবস্থানের জন্য বিশাল প্যান্ডেলকে খিত্তায় খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। মুসল্লিদের অনেকেই বলছেন, দ্বিধা বিভক্ত না হয়ে একসঙ্গে ইস্তেমার আয়োজন করতে পারলে আরো ভালো হতো।

ইজতেমার ধাপ ও মুসুল্লিদের সংখ্যাব বেড়ে যাওয়ায় আগের চেয়ে নানা সুযোগ সুবিধ বাড়িয়ে ইজতেমা আয়োজন করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশন ও জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাগণ।

তারা বলছেন, পানি সরবরাহ পয়নিষ্কাশন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সহ সব ধরনের কাজ বেড়ে গেছে। জনবল ও সুবিধাদি বাড়িয়ে এই সেবা নিশ্চিত করতে তারা প্রস্তুত রয়েছেন।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন জানান,ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় মুসল্লিদের চলাফেরা, খাবার দাবার সহ প্রশাসনিক সেবা ও তৎপরতা বাড়াতে অন্যান্য জেলা থেকেও আনা হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেট। তাদের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট চলবে নিয়মিত।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ডঃ মোঃ নাজমুল করিম খান জানান, প্রতিবারের মতো এবারো ওয়াচ টাওয়ার, সিসি ক্যামারায় মনিটরিংসহ কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে ইজতেমা মাঠকে ঘিরে। সাত হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য সহ নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন থাকবে ইজতেমা ময়দানে।

ইজতেমার দেশী-বিদেশী শীর্ষ পর্যায়ের মুরৃব্বীরা তাবলীগের ৬ ওসুল বা ছয়টি মূলনীতির উপর বয়ান করবেন। তাবলীগ জামাতের বিদেশী মুসুল্লিসহ দেশের লাখ লাখ মুসুলীর অংশ গ্রহণে আগামী রোববার আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে বলেই আশা করছেন আয়োজকগন ।


শেয়ার করুন

Similar Posts