গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ : চার জেলায় কেএফসি, বাটার শোরুমে ভাঙচুর

ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিল থেকে দেশের চার জেলায় কেএফসি, পিৎজা হাট ও বাটাসহ কয়েকটি শোরুমে হামলা-ভাঙচুর হয়েছে।
ইসরাইলি পণ্য দাবি করে বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও ফাস্ট ফুডের দোকানে কোকাকোলা ও সেভেন আপসহ কয়েকটি কোমলপানীয়ও ধ্বংস করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
সোমবার চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার ও বগুড়ায় এসব হামলা-ভাঙচুর হয়েছে। সিলেটে হামলার প্রতিবাদে শহরে মাইকিং করে নিন্দা জানিয়েছে মহানগর বিএনপি। ব্যুরো ও প্রতিনিধির পাঠানো খবর
চট্টগ্রাম : নগরীর জিইসি মোড়ে কেএফসি রেস্তোরাঁ, একটি ভবনের কোকাকোলার সাইনবোর্ড এবং লালখান বাজারে পুমা শোরুমে ইট-পাটকেল, জুতা নিক্ষেপ করেছে বিক্ষোভকারীরা। এ ছাড়া নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকায় ব্র্যাক ব্যাংকের শাখা ভাঙচুরের চেষ্টা করে তারা। বিকাল ৪টার দিকে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ইসরাইলবিরোধী কয়েকটি বিক্ষোভ মিছিল থেকে এই হামলা করা হয়।
এদিকে সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহুর একটি কুশপুত্তলিকায় জুতা মেরে ঘৃণা প্রকাশ করা হয়। পরে কুশপুত্তলিকায় আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
কক্সবাজার: বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী জানান, ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে কক্সবাজারে যে মিছিল বের হয়েছে, সেখান থেকে কিছু দুষ্কৃতকারী কলাতলীর প্রায় ১০টির বেশি রেস্তোরাঁয় ভাঙচুর করেছে। এতে বিশাল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এর দায়ভার কে নেবে? পর্যটকে ভরপুর এ মৌসুমে এটি রেস্তোরাঁ শিল্পের জন্য বড় অশনিসংকেত।

কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ইকবাল বলেন, ইসরাইলি পণ্য রাখার অজুহাতে কেএফসি, পিৎজা হাটের পাশাপাশি কাঁচা লংকা, পানসী ও মেরিন ফুড রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় কাচের টুকরো লেগে কয়েকজন পর্যটক আহত হন।
বগুড়া: সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মিছিল নিয়ে ছাত্র-ছাত্রী ও তৌহিদী জনতা ব্যানার, প্লাকার্ড, ফেস্টুন হাতে শহরের সাতমাথায় জড়ো হন। বেলা ১১টায় মুক্তমঞ্চের সামনে থেকে মিছিল বের করা হয়।
এ সময় ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদ ও ইসরাইলি পণ্য বর্জনের বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলের কারণে শহরের বিভিন্ন সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে বিক্ষোভকারীরা সাতমাথায় ফিরে এসে বাটার শো-রুমে হামলা চালায়। ইটপাটকেল ছুড়ে তারা শোরুমের কাচের বেষ্টনী ভাঙচুর করে। এ সময় দোকানের কর্মচারীরা দরজা বন্ধ করে রক্ষা পান।
সিলেট: সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই এলাকায় মানববন্ধন করেন বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
দুপুরে নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করে জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, ইসলামী দল, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়াসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠন। এসব বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিক্ষুব্ধ জনতা কেএফসি, ডোমিনোস পিৎজা ও বাটার আউটলেটসহ কমপক্ষে ১০ প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর চালায়। ফুটপাতের কিছু প্রতিষ্ঠানে আগুনও দেয় তারা।
মহানগরের মিরবক্সটুলায় কেএফসি রেস্টুরেন্টের ভেতরে থাকা বিভিন্ন কোমলপানীয় নষ্ট করা হয়। এরপর রেস্টুরেন্টটি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও কয়েকটি ফাস্টফুডের দোকানে কোমলপানীয় পেপসি, কোকাকোলা, স্প্রাইট, ফানটা, সেভেন আপের শত শত বোতল ও কার্টন রাস্তায় ফেলে ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
হামলা-ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা জানিয়ে মহানগর বিএনপি শহরে মাইকিং করেছে। মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, যারা হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট করছে তারা ডাকাত। তাদের আটক করে পুলিশে দিন।