ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহিদের কন্যা লামিয়ার আত্মহত্যা

ফাইল ফটো।
শেয়ার করুন

‎ধর্ষণের ঘটনার পর জুলাই আন্দোলনে শহিদ জসীম উদ্দিনের কন্যা লামিয়া (১৭) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

শনিবার রাত নয়টায় শেখেরটেক ৬ নম্বর রোডের বি/৭০ নম্বর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

‎প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য রোববার বিকালে মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তার। শনিবার মার্কেট থেকে কিছু কাপড়ও কিনেছেন। রাত আটটায় নিহতের মা রুমা বেগম ছোট মেয়েকে বাসার পাশেই মাদ্রাসায় দিয়ে আসতে যান। সেই সুযোগে রাত নয়টার দিকে রুমের ভেতর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন লামিয়া।

এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান।

‎নিহতের মামা সাইফুল ইসলাম জানান, আমি দোকানে বসা ছিলাম। হঠাৎ ফোনে জানতে পারি, আমার ভাগনী মারা গেছে। আমি দৌঁড়ে হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাগনির মরদেহ হাসপাতালে পড়ে আছে। জুলাই আন্দোলনে আমার বোন স্বামীহারা হলো। এখন মেয়েকে হারিয়েছে। আমার ভাগনির ধর্ষকরা জামিন পেয়ে গেছে। এখন আমার ভাগনি চলে গেছে। আমরা কার কাছে বিচার চাইব। কে বিচার করবে আমাদের।

উল্লেখ্য, পটুয়াখালীর দুমকি থানার ওসি মো. জাকির হোসেন যুগান্তরকে জানিয়েছেন, লামিয়াকে ধর্ষণের ঘটনায় এজাহারনামীয় দুই আসামি জামিন পাননি।

‎প্রতিবেশী জামিলা খাতুন জানান, সন্ধ্যার পর মা-মেয়ে মিলে কাপড় কিনেছেন। আগামীকাল (রোববার) বিকালে লঞ্চে করে বাড়িতে যাবে। আজকে (শনিবার) রাতে ছোট মেয়েকে নিয়ে মাদ্রাসায় যাওয়ার পর বড় মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। হয়তো কেউ তাকে ফোনে এমন কোনো হুমকি ধমকি দিয়েছে। যার কারণে সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। আমরা এ হত্যার বিচার কার কাছে আর চাইবো।

‎এ বিষয়ে আদাবর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম জাকারিয়া জানান, এ ঘটনায় আমরা হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‎প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে শহিদ জসীম উদ্দিনের মেয়ে তার বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে যাচ্ছিলেন। পথে নলদোয়ানী থেকে অভিযুক্তরা পিছু নেয়। হঠাৎ পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে পার্শ্ববর্তী জলিল মুন্সির বাগানে নিয়ে যায় সাকিব ও সিফাত। একপর্যায়ে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এমনকি তার নগ্ন ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় দুর্বৃত্তরা।


শেয়ার করুন

Similar Posts