আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধে যানবাহন চলাচল বন্ধ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ফের উত্তাল হয়েছে শাহবাগ।
শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের পাশ থেকে শুরু হওয়া একটি প্রতিবাদ সমাবেশ পরিণত হয় শাহবাগ মোড় অবরোধে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই শাহবাগ মোড়জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলনের ঢেউ। যেন ফিরে এসেছে ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক ‘জুলাই আন্দোলনের’ সেই বিদ্রোহী আবহ।
অবরোধ কর্মসূচিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের শীর্ষ সংগঠকরা ছাড়াও উপস্থিত রয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
এছাড়া জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মী ও বিপুল সংখ্যক ছাত্র-জনতা শাহবাগে উপস্থিত হয়েছেন।
অবরোধ কর্মসূচিতে উপস্থিত মানুষের মুখে একটাই দাবি-“আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।” আন্দোলনকারীদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় একের পর এক স্লোগান- “ব্যান করো, ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো”, “আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে?”, “গোলামি না আজাদি—আজাদি, আজাদি”,“আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও, ঘুরিয়ে দাও”, “২৪ বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই”।
প্রতিটি স্লোগানে ছিল ক্ষোভ আর প্রতিবাদের চেহারা। বুকে প্ল্যাকার্ড, হাতে ফেস্টুন—লিখা ছিল একটিই বার্তা- ‘এই দল রাষ্ট্রদ্রোহী, নিষিদ্ধ চাই এখনই’।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের বাসভবন যমুনার সামনে এনসিপির ডাকে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে সরাসরি এই অবরোধ কর্মসূচির সূচনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা জানিয়ে দিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক ছাড়বেন না।
শাহবাগের অবরোধ কর্মসূচিতে আসার ছাত্র-জনতা জানান, ২০২৪ সালের ‘জুলাই আন্দোলনের’ সাফল্যের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিলেও, রাজনৈতিক সংস্কারের প্রক্রিয়া এখনও অসম্পূর্ণ। এই প্রেক্ষাপটে নতুন করে জোরালো হয়েছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি। আন্দোলনকারীদের মতে, সংগঠিত অপরাধ, দমনপীড়ন এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের দায়ে দলটির অস্তিত্ব বিলুপ্ত করা এখন সময়ের দাবি।
এদিকে শাহবাগের এই অবরোধে কার্যত অচল হয়ে পড়ে পুরো এলাকা। সায়েন্সল্যাব, বাংলামোটর ও টিএসসি অভিমুখে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ, তবুও পরিস্থিতি ছিল উত্তেজনাপূর্ণ।
শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আমরা মোতায়েন আছি।