তালতলী খাদ্য গুদামের ভিজিএফ চালের বস্তায় ওজনে কম!

তালতলী উপজেলার খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহকৃত ভিজিএফ সরকারী চালের বস্তায় ওজনে কম দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোনাকাটা ইউনিয়নের জেলেরা এমন অভিযোগ করেছেন। জেলেদের অভিযোগ গোডাউন কর্তৃপক্ষ বস্তা থেকে চাল সরিয়ে রেখে বস্তা সরবরাহ করছেন। ৩০ কেজির বস্তায় ২৬.৪ কেজি এবং ৫০ কেজির বস্তায় ৪৮.৬ কেজি চাল হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলায় ৮ হাজার ৭’শ ৯৯ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। ওই জেলেদের মধ্যে মানবিক সহায়তার কর্মসুচীর আওতায় জাটকা আহরনে বিরত ৫ হাজার ১০ জন জেলেদের মধ্যে ৮০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছেন সরকার। ওই চাল রবিবার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ১ হাজার ৩’শ ৭৬ জেলেদের মধ্যে বিতরন করা হয়। উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে ওই জেলেদের জন্য ১১০ মেট্রিক টন সরকারী বস্তায় চাল সরবরাহ করেছে। এর মধ্যে ৩০ কেজি ও ৫০ কেজির বস্তা রয়েছে। ৩০ কেজি বস্তায় ২৬.৪ কেজি এবং ৫০ কেজির বস্তায় বস্তাসহ ৪৮.৬ কেজি চাল হচ্ছে। জেলেদের অভিযোগ উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ বস্তা থেকে চাল সরিয়ে তা জেলেদের মাঝে বিতরন করছেন। ৮০ কেজি চালের বিপরীতে তারা চাল পাচ্ছেন ৭৫ কেজি। ৫ কেজি চাল দুটি বস্তা থেকে উধাও। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা।
জেলে রফিক ও জহিরুল বলেন, ৮০ কেজির চালের দুইটি বস্তা দিয়েছে। তাতে একটি ৩০ কেজির বস্তায় ২৬.৪ কেজি এবং ৫০ কেজির বস্তায় ৪৮.৬ কেজি। তিনি আরো বলেন, বস্তার ওজন বাদ দিলে চাল আরো অন্তত আধা কেজি কম হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলে বলেন, সরকার আমাদের জন্য ৮০ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ বস্তা থেকে চাল সরিয়ে রাখছে। ওই কম ওজনের চালের বস্তা আমাদের মাঝে বিতরন করছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান তারা।
সোনাকাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরাজী মোঃ ইউনুস বলেন, খাদ্য গুদাম থেকে সে চালের বস্তা সরবারহ করছে,ওই চালের বস্তাই জেলেদের মাঝে বিতরন করা হয়েছে। চালের বস্তায় খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ চাল কম দিলে আমার কি করার আছে? বস্তায় চাল কম দেয়া বিষয়ে খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে কিন্তু তারা তা আমলে নিচ্ছেন না।। তিনি আরো বলেন, বস্তায় চাল কম হওয়ার কথা জেলেরা আমাকেও বলেছেন।
সোনাকাটা ইউনিয়ন পরিষদ চাল বিতরন তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সঞ্জয় সিকদার বলেন, চালের বস্তা আমি ওজন করে দেখিনি। সরকারী সিল মারা বস্তা ওজন করে দেখার কিছু নেই।
তালতলী খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (এলএসডি) কমল অধিকারীর মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে তিনি অন্য একজনকে দিয়ে মুঠোফোনে সংবাদ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ উম্মে সালমা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোহাম্মদ তানভির হোসেনের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সফিউল আলম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।