রাজনীতি বা মবের নামে দেশে নাশকতার আর কোনো সুযোগ নেই : বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম

রাজনীতি বা মবের নামে দেশে নাশকতার আর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাড়িতে হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বিএনপি ও এনসিপি নেতাদের সাথে রোববার (০১ জুন) রাতে রংপুর স্টেডিয়ামের অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
জিএম কাদেরের বাড়িতে হামলার ঘটনায় রোববার রাত ৯টার দিকে অভিযুক্তদের নিয়ে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুমের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বিএনপি ও এনসিপির নেতারা। এসময় জড়িতদের ব্যাপারে নেতাদের কাছে তাদের নিজ নিজ দলের অবস্থান জানতে চান ওই সেনা কর্মকর্তা।
বৈঠকে বিএনপি ও এনসিপির নেতারা হামলার ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ ও ‘ভুল বোঝাবুঝির ফল’ বলে উল্লেখ করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না করার প্রতিশ্রুতি দেন। তারা সহিংসতা এড়াতে সব রাজনৈতিক পক্ষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু বলেন,
সম্প্রতি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের রংপুরের আসা ও তার বক্তব্য এবং মহানগরীর সভাপতির বক্তব্যের কারণে একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। গতকাল সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলার পরে আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে তাদের সাথে আমরা বসবো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি ও বিএনপি নেতারা যারা ওই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ছিল তাদেরকে এখানে নিয়ে এসেছি। আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা নিরসন করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দলের অঙ্গ সংগঠনের দুজন সদস্য এ ভুলের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। তাদের সাথে আমরা কথা বলেছি এবং তারা সরি বলেছে। আমরা মনে করি তারা যেহেতু ভুল বুঝেছে, ভবিষ্যতে এরকম কোনো ঘটনা ঘটবে না। রংপুরকে একটি শান্তির রংপুর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি বলেন, ‘গত ২৯ মে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়েছিল। জাতীয় পার্টির সন্ত্রাসীরা মিছিলে হামলা চালায়। এর প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া হয়। জিএম কাদের সাহেব যিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান তার বাসায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরকম একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রীতিকর ঘটনায় রংপুরে উত্তেজনা বিরাজ করে। এর প্রেক্ষিতে গতকাল শনিবার ৭২ ব্রিগেডের সম্মানিত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমাদের তলব করেছিলেন। পরে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যারা ছিল তাদের সাথে নিয়ে এসেছিলাম। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে নিশ্চিত করেছি, এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি রংপুরে যেন আর না হয়। এ জায়গা থেকে সচেতন থাকব।’
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আনন্দিত, এনসিপি ও বিএনপির প্রতিনিধিরা স্বপ্রণোদিত হয়ে এখানে এসেছেন। তাদের যে সকল কর্মী আবেগী হয়ে হোক বা যেকোনো কারণেই হোক আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার চেষ্টা করেছিল, কিছু কর্মকাণ্ড করেছিল, আমরা তাদের চিহ্নিত করার সুযোগ দিয়েছিলাম। তারা নিজে থেকে এসেছেন। তারা এরকম আর কিছু করবে না ভবিষ্যতে। আমরা আশা করব, তারা তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড যেটা নিয়মের মধ্যে পড়ে সেভাবে চালিয়ে যাবেন।
কোনো মবের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে বাধা সৃষ্টি করা বা এসব কর্মকাণ্ড শুধু রংপুরে নয়, বাংলাদেশের কোথাও করার সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।