ঢাকায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্প প্রশাসনের ‘আগ্রহ খুবই সীমিত’: কুগেলম্যান

বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা বা রাষ্ট্রগঠনে সহায়তার বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের ‘আগ্রহ খুবই সীমিত’ বলে মন্তব্য করেছেন ওয়াশিংটনভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান। তার মতে, বর্তমান হোয়াইট হাউজ ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ককে মূলত বাণিজ্যিক স্বার্থ এবং ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতার চোখে দেখছে।
কুগেলম্যান বলেন, বাইডেন প্রশাসনের শেষ দিকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিভিন্ন কারিগরি সহায়তা ও উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি দেখা গেলেও ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিতে সে ধরনের অগ্রাধিকার নেই। গত আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ গঠনের চেষ্টা চলছিল, তা নতুন প্রশাসনের কাছে মূল এজেন্ডা নয়।
তিনি বলেন, “ওয়াশিংটনের দৃষ্টিতে এখন বাংলাদেশ শুধু বাণিজ্যিক সুযোগ ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা প্রতিযোগিতার একটি অংশ মাত্র।” কুগেলম্যান মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন চীন মোকাবিলার কৌশলের অংশ হিসেবেই বাংলাদেশকে বিবেচনা করছে।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মধ্যকার ফোনালাপেই স্পষ্ট-এই মুহূর্তে ট্রাম্প প্রশাসনের অগ্রাধিকার বাণিজ্য ও নিরাপত্তা। তারা অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব এবং ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা ইস্যুতে আলোচনা করেছেন, যেখানে গণতন্ত্র বিষয়টি ছিল গৌণ।
বাংলাদেশের জন্য এতে জটিলতা বাড়তে পারে বলেও সতর্ক করেন কুগেলম্যান। কারণ, বাণিজ্য চুক্তি না হলে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৩৭ শতাংশ শুল্ক গুনতে হতে পারে। অন্যদিকে, দেশের দীর্ঘদিনের জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতিও হুমকির মুখে পড়তে পারে।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এখন একটি স্পর্শকাতর কূটনৈতিক মোড়ে দাঁড়িয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হলেও চীনের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরি।” মার্কো রুবিওর সঙ্গে ইউনূসের ফোনালাপকে তিনি দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে ঢাকা-ওয়াশিংটনের সম্পর্কের ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি হিসেবেও দেখছেন।