স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাসকে বরখাস্ত

বিনা অনুমতিতে ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাসকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিষয়টি নিশিঋচত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেসুর রহমান সই করা এক প্রজ্ঞাপনে জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট ধনঞ্জয়কে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক নিয়োগের জন্য তার চাকরি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। ২ সেপ্টেম্বর তিনি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন। কিন্তু ধনঞ্জয়ের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশিত হওয়ায় তার আদেশ প্রত্যাহার বা বাতিলের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চিঠি দেয় বস্ত্র মন্ত্রণালয়।
বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পর গত ৩-১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। পরে গত ৫ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ধনঞ্জয়কে যুগ্মসচিব হিসেবে পরবর্তী পদায়নের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করে। তবে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যোগ না দিয়ে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন, যা ‘পলায়ন’ এর পর্যায়ভুক্ত অপরাধ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ছাত্র রমিজ উদ্দিন আহমেদের বাবা এ কে এম রকিবুল আহমেদ তার ছেলেকে হত্যার দায়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর ধনঞ্জয়সহ ২২৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন জানিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ধনঞ্জয় কুমার জুলাই-আগস্ট বিপ্লবকালে ও পরবর্তী সময়ে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক বক্তব্য ও পোস্ট দিয়েছেন, যাতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তাদের মনে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে ও নাশকতা সংঘটিত হতে পারে মর্মে আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং তার বক্তব্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা অনুযায়ী পরিহারযোগ্য বিষয়াদির আওতাভুক্ত।
এসব কারণে ধনঞ্জয়ের বিরুদ্ধে গত ২০ ফেব্রুয়ারি অসদাচরণ, পলায়ন ও নাশকতার অভিযোগে বিভাগীয় মামলা করে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। তার স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা এবং ই-মেইলে অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী পাঠানো হয়। নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও তিনি লিখিত জবাব না দেয়ায় তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, তদন্ত বোর্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী ধনঞ্জয়ের বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলেও নাশকতার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। ফলে তাকে চাকরি হতে বরখাস্তের গুরুদণ্ড কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। এই নোটিশের জবাবও না পাওয়ায় তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের দণ্ড দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর এ বিষয়ে সরকারি কর্ম কমিশন একমত পোষণ করে এবং রাষ্ট্রপতি সম্মতি জানায়। এ জন্য পলায়নের তারিখ অর্থাৎ ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ধনঞ্জয়কে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।