নির্বাচনের সময় ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপিসহ যেসব দল

আগামী ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। আগামী জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। দলটি বলেছে, এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন নিয়ে যে দোদুল্যমানতা ছিল, সেটি কেটে গেছে। এ নিয়ে বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে জামায়াতে ইসলামী।
রাতে জানতে চাইলে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্টভাবে ঘোষণা দিয়েছেন এটাকে স্বাগত জানাই। তবে সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন বিষয়ে রাজনৈতিক নির্দেশনার প্রয়োজন ছিল। এখন প্রধান উপদেষ্টার চিঠি গেলে ইসি আশ্বস্ত হবে। তারা বিস্তারিত সূচি সেটা দেবে। প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে এতদিন যে রাজনৈতিক দলগুলোতে দ্বিধা, অবিশ্বাস, সন্দেহ ছিল, তা কেটেছে। তার অনেকখানি অবসান ঘটবে।’ সরকারের সঙ্গে মনঃস্তাত্ত্বিক দুরত্ব কমবে বলেও মনে করেন সাইফুল হক।
স্বাগত জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। দলটির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য জাতীয় নির্বাচন অত্যাবশ্যক, এর সুনির্দিষ্ট সময় ঘোষণা জনজীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে আমরা মনে করি। আগামী নির্বাচনকে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হিসেবে অনুষ্ঠান এই সরকারের একটি বড় দায়িত্ব এবং চ্যালেঞ্জ। আমরা অবিলম্বে নির্বাচনে সকলের সম সুযোগ সৃষ্টি নির্বাচনি প্রক্রিয়ার ওপরে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে নিয়ে আসার উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
রমজানের আগে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে এবি পার্টি। দলটির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি দৃশ্যমান বিচার ও জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন করতে হবে।’
ইসলামি গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এমএ আউয়াল বলেছেন, ‘দেশের মানুষ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। প্রধান উপদেষ্টা আজকে যে ঘোষণা দিয়েছেন, এটা মনে করি— ইতিবাচক ঘোষণা। এর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো মধ্যে নির্বাচন নিয়ে যে দোদুল্যমান অবস্থা ছিল, তার অবসান হবে বলে মনে করি।’
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নির্বাচনের ব্যাপারে একধাপ অগ্রগতি। তবে আমরা মনে করি, এখনো ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সুযোগ রয়েছে। তিনি যদি এটি নির্বাচন কমিশনকে বললে যথাযথ হতো।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই মানসিকভাবে ধরে নিয়েছিলাম, তিনি আগেও বলেছিলেন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করবেন। সে হিসেবে ঠিকই আছে। তবে ঘোষণার প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক দলের মধ্যে ক্ষোভ আছে।’
এদিকে বুধবার বেলা ৩টায় মালিবাগের মহানগর কার্যালয় থেকে প্রেসক্লাব পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে ‘আনন্দ মিছিল’ করবে এনডিএম কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। মঙ্গলবার রাতে দলটির দফতর সম্পাদক জাবেদুর রহমান জনি এ কথা জানান।
ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘোষণা করায় প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাই । জনশক্তি পার্টি মনে করে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য হবে। এবং সব রাজনৈতিক দলকে কাজ করার জন্য লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করবে।