বরগুনা জেলার তিনটি সংসদীয় আসন ফিরে পাওয়ার দাবীতে আমতলীতে মানববন্ধন

শেয়ার করুন

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি

বরগুনা জেলার তিনটি সংসদীয় আসন ফিরে পাওয়ার দাবীতে আমতলীতে মানববন্ধন করা হয়েছে।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় উপজেলা পরিষদ সড়কে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার সহস্রাধিক মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেয়। মানববন্ধনে বক্তারা নির্বাচন কমিশনকে বরগুনা জেলার তিনটি সংসদীয় আসন পুর্নবহালের দাবী জানিয়েছেন।

জানাগেছে, বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের উপকুলীয় বরগুনা জেলা ছয়টি উপজেলা নিয়ে গঠিত। আয়তন ১৮৩১.৩১ বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা ১২ লক্ষ ৫০ হাজার। বরগুনা জেলার ছয়টি উপজেলাকে পায়রা (বুরিশ্বর) ও বিশখালী নদীতে বিভক্ত করে রেখেছে। পায়রা নদীর পুর্ব পাড়ে আমতলী ও তালতলী উপজেলা। পশ্চিম দিকে বরগুনা সদর ও বেতাগী উপজেলা। বিশখালী নদীর পশ্চিম দিকে পাথরঘাটা ও বামনা উপজেলা। স্বাধীনতার পর থেকে বরগুনা জেলায় তিনটি সংসদীয় আসন ছিল। স্বাধীনতার পুর্ববর্তী ও পরবর্তী সরকার পায়রা ও বিশখালী নদীর ওপর ভিত্তি করে উপকুলীয় বরগুনা জেলাকে তিনটি সংসদীয় আসনে বিভক্ত করেছেন। বরগুনা সদর ও বেতাগী উপজেলা নিয়ে বরগুনা-১ আসন, পাথরঘাটা ও বামনা নিয়ে বরগুনা-২ আসন এবং আমতলী ও তালতলী নিয়ে বরগুনা-৩ আসন। কিন্তু ২০০৮ সালের ১০ জুলাই তৎকালিন ১/১১ সরকার সমর্থিত নির্বাচন কমিশন ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়ামীলীগ দলকে সুবিধা দিতে পরিকল্পিতভাবে বরগুনা জেলার তিনটি সংসদীয় আসনকে ভেঙ্গে দুইটি সংসদীয় আসনে বিন্যাস্ত করেন। বরগুনা সদর, আমতলী, তালতলী উপজেলা নিয়ে বরগুনা-১ আসন এবং পাথরঘাটা, বেতাগী ও বামনা উপজেলা নিয়ে বরগুনা-২ আসন গঠন করা হয়। এতে উন্নয়ন বঞ্চিত হয় সর্ব দক্ষিণের উপকুলীয় বরগুনা জেলার সাড়ে ১২ লাখ মানুষ।

গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বরগুনা জেলার আসন পুর্নবহাল না করে খসরা গেজেট প্রকাশ করেছে। এতে বরগুনা জেলার সংসদীয় আসনে কোন পরিবর্তন আনেননি। এতে বরগুনা জেলার সাড়ে ১২ লাখ মানুষ ক্ষুব্দ হন। পরে গত ১০ আগষ্ট নির্বাচন কমিশনে বরগুনা জেলায় তিনটি সংসদীয় আসন পুর্নবহালের দাবীতে ১৩০ জন ব্যাক্তি আবেদন করেছেন। আগামী ২৫ আগষ্ট বরগুনা জেলার এ সংসদীয় আসনের আপিল শুনানির দিন ধায্য করেছে নির্বাচন কমিশন। এ তিনটি সংসদীয় আসন ফিরে পেতে শনিবার আমতলী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করা হয়েছে। এতে আমতলী উপজেলার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার অন্তত সহ¯্রাধিক মানুষ অংশ নেয়। তাদের দাবী বরগুনা জেলার তিনটি সংসদীয় আসন ফেরত দিতে হবে। নইলে উপকুলীয় জেলা বরগুনা উন্নয়ন বঞ্চিত হবে। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ অধ্যাপক এডভোকেট মজিদ মল্লিক, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোঃ জহিরুল ইসলাম ভিপি মানুন, সদস্য সচিব তুহিন মৃধা, বে-সরকারী সংস্থা এনএসএস নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট শাহাবুদ্দিন পান্না, প্রেসক্রাব সভাপতি রেজাউল করিম বাদল, মকবুল খাঁন, পৌর বিএনপির আহবায়ক কবির ফকির, বিআরডিবির চেয়ারম্যান মাইনুদ্দিন মামুন ও সৈয়দ আসাদুজ্জামান কাওসার প্রমুখ।

বিএনপির প্রায়াত মহাসচিব অ্যাডভোকেট খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের সাবেক (এপিএস) বরগুনা জেলা বিএনপির সদস্য ওমর আব্দুল্লাহ শাহীন বলেন, সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত, প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কন্ঠস্বর মহান সংসদে পৌছানো, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি উন্নয়ন, নদী ভাঙ্গণ প্রতিরোধসহ মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিতের লক্ষে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বরগুনা জেলায় তিনটি সংসদীয় আসন পুর্নবহালের বিকল্প নেই। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশন বরগুনা জেলার সাড়ে ১২ লাখ মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে তিনটি সংসদীয় আসন পুনর্বহাল করবেন।

সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক অ্যাডভোকেট মজিদ মল্লিক বলেন, ভৌগলিক অবস্থান ও প্রশাসনিক সুবিধার কথা বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন বরগুনা জেলার সংসদীয় তিনটি আসন পুর্নবহাল দাবী জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশন খসরা তালিকা প্রকাশ করলেও বরগুনা জেলার তিনটি সংসদীয় আসন পুর্নবহাল করবেন বলে বিশ্বাস করি।


শেয়ার করুন

Similar Posts