কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল হাসপাতালের পরিচালকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা

কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল–১ আদালতে রোববার (৩১ আগস্ট) মামলাটি দায়ের করেন হাসপাতালে প্যাথলজি বিভাগে আউটসোসিংয়ে কর্মরত এক নারী কর্মচারী।
আদালতের বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ নূরুল আমীন বিপ্লব মামলাটি আমলে নিয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম রতন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মামলার বাদী ও বিবাদী দুই জনই বিবাহিত। বাদীর স্বামী লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। চাকরির পাশাপাশি তিনি আইন বিষয়ে পড়াশুনা করছেন। বাদীকে বিভিন্ন সময় চাকরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকার শারীরিক সম্পর্কের চেষ্টা করেন। তিনি বিবাহিত, পিতার বয়সী এবং অন্য ধর্মের বলেও রেহাই পাননি। অনেক অর্থবিত্তের মালিক এবং প্রয়োজনে নিজ ধর্ম ত্যাগ করে হলেও তাকে বিয়ে করতে চান বলে বাদীকে আশ্বস্ত করেন। কারণে অকারণে বিভিন্ন সময় তাকে রুমে ডেকে নিয়ে শরীরে হাত এবং কুপ্রস্তাব দিতেন। রাজী না হলে চাকুরিচ্যুতি এমনকি গুলি করে মেরে ফেলারও হুমকি দিতেন। মোবাইল ফোনে কুরুচিপূর্ণ ম্যাসেজও পাঠাতেন তিনি। বিষয়টি হেলিশ রঞ্জন সরকারের স্ত্রী জানার পর তিনিও তাকে শাসিয়েছেন।
গত ২১ আগস্ট স্ত্রীর সামনে বিষয়টি মীমাংসা করার কথা বলে বাদীকে হাসপাতালের কোয়াটারে ডেকে নেন ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকার। কিন্তু কোয়াটারে গিয়ে তার স্ত্রীকে দেখতে পাননি। এই অবস্থায় কোয়ার্টারে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন বাদীকে। চাকরিচ্যুতির ভয় এবং স্বামীর লিভার সিরোসিসের কথা চিন্তা করে মুখ খুলেননি তিনি। পরে ২৬ আগস্ট বিকেলে বাদীকে অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে আবারো ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ডাক চিৎকার শুরু করলে হাসপাতালের স্টাফ ও দর্শনার্থীরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। এই সময় ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকার তাকে বিবাহিত স্ত্রী বলে পরিচয় দিয়ে রক্ষা পান। বিষয়টি তিনদিনের মধ্যে সমাধান করার কথা বলে বাদীকে বিদায় করেন। কিন্তু পরে আপোষ মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন বাদী।
থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মামলা নেয়নি উল্লেখ করে তিনি (বাদী) বলেন, বাধ্য হয়ে আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন।
এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকারকে একাধিকবার ফোন করলেও পাওয়া যায়নি।